প্রতি বছর প্রায় ৪৬ হাজার কিশোর-কিশোরী অবসাদের কারণে আত্মহত্যা করে। ছবি-প্রতীকী
সারা বিশ্বে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অন্তত ১৩ শতাংশ ভুগছে মানসিক সঙ্কটে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে এমনি একটি তথ্য প্রকাশ করেছে ‘ইউনাইটেড নেশনস্ চিলড্রেন ফান্ড’ (ইউনিসেফ)। ইউনিসেফের তথ্য বলছে, ১০-১৯ বছর বয়সি ৭ জনের মধ্যে ১ জনেরও বেশি মানসিক ব্যাধিতে ভুগছে। প্রতি বছর প্রায় ৪৬ হাজার কিশোর-কিশোরী এই অবসাদের কারণে আত্মহত্যা করে।
‘ইউনিসেফ’-এর সমীক্ষা বলছে, অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় ভারতে কিশোর এবং সদ্য তরুণদের মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার প্রবণতা তুলনায় কম। মানসিক সমস্যাকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। অন্য দিকে, মানসিক সঙ্কট নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করার বদলে, তা নিজেদের মধ্যে চেপে রাখার ঝোঁকও বেশি। কমবয়সিদের মানসিক অবসাদ নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করার সুযোগও তেমন পাওয়া যায় না। অভিভাবকদের মধ্যেও সন্তানের মানসিক পরিস্থিতিকে কম গুরুত্ব দেওয়ার একটি লক্ষণ দেখা যায়। মানসিক সঙ্কট নিয়ে পুরনো চিন্তাভাবনা, এমন সমস্যা প্রতিকারের অন্যতম বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে বলে মত ইউনিসেফের।
অবসাদ কোনও রোগ নয়। এক ধরনের মানসিক দুর্বলতা। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠারও অনেক সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম পারস্পরিক আলোচনা। ইউনিসেফের প্রকাশিত একটি তথ্য বলছে, কোভিড পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে ১০-১৯ বছর বয়সিদের মনে। অনলাইন পড়াশোনা, সামাজিক দূরত্ব, বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, সব মিলিয়ে অবসাদ আরও জাঁকিয়ে বসেছে। সেই সঙ্গে রয়েছে পারিবারিক আর্থিক অসঙ্গতিও। লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। হঠাৎ আর্থিক টানাটানি প্রভাব ফেলেছে বাড়ির কমবয়সিদের মনেও। সাম্প্রতিক রিপোর্ট জানাচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্যখাতে বিশ্বে বরাদ্দ অর্থের মাত্র খরচ হয় ২.১ শতাংশ। এই অবহেলা সত্যিই উদ্বেজনক বলে মনে করছে ইউনিসেফ।