ভেতো বাঙালির পাতে মেদহীন ভাত তুলে দেওয়ার পথে শ্রীলঙ্কার গবেষকরা। ছবি: পিক্সঅ্যাবে।
‘ভেতো বাঙালি’ কেবল প্রবাদেই আটকে নেই। বাঙালির জীবনযাপন ভাত ছাড়া ভাবা প্রায় অসম্ভব। ওবেসিটির জুজু, ব্লাড সুগারের ভূত যতই তাড়া করুক, ভাত বিনে বাঙালির আহার যেন ম্যাড়মেড়ে।
তবে এ বার ভেতো বাঙালির জন্য সুখবর বয়ে এনেছে শ্রীলঙ্কার কলেজ অব কেমিক্যাল সায়েন্সের গবেষকেরা। তাঁদের দাবি, এই পদ্ধতি অবলম্বন করে ভাত রাঁধলে ভুঁড়ি তো হবেই না, বরং ভাতে উপস্থিত ক্যালোরি প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা যায়।
আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি-র জাতীয় সমাবর্তনে গবেষণার প্রধান সুধের জেমস জানান, শর্করার রকমফেরের উপর ভিত্তি করেই এই গবেষণা করা হয়েছে। বিশ্বের প্রায় ৩৮ রকম চালের উপর পরীক্ষা চালিয়েছে সুধেরের দল। তাঁদের মতে, এমনিতেই সরল শর্করা হজম করতে যত না সময় লাগে, তার চেয়ে জটিল শর্করা হজমে সময় লাগে অনেক বেশি। আর এতেই শরীরে জমে যায় গ্লাইকোজেন। কতখানি গ্লাইকোজেন শরীরে জমছে, তার উপরই নির্ভর করে শরীরে মেদ জমার সম্ভাবনা। গ্লাইকোজেন কমাতে বেশি এনার্জির প্রয়োজন। তাই ভাতের জটিল শর্করাকে সরলে পরিণত করলেই তা কমায় ওবেসিটির ভয়। নারকেল তেল শরীরে গ্লাইকেজেনকে গলাতে সাহায্য করে। তাই চাল ফোটানোর আগে জলে নারকেল তেল ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।
নারকেল তেলের গ্লাইকোজনে কমানোর ক্ষমতার উপর আস্থাশীল গবেষরা। ছবি: পিক্সঅ্যাবে
শুধু তা-ই নয়, ভাত রান্নার পর তাকে ১২ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে খাওয়ার আগে গরম করে খেতে বলছেন তাঁরা। এতে শর্করার হাইড্রোজেন বন্ড ভেঙে নতুন আকার নেয়। ফলে শরীরে দ্রবীভূত শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। মেদ জমে না।
আমেরিকার সেই সমাবর্তনে হাজির অন্য গবেষকরাও এতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নানা দেশে ভাত রান্নার পদ্ধতি ও তাদের খাদ্যাভ্যাসকে মাথায় রেখে এই পরীক্ষা পদ্ধতির আরও প্রয়োগ চেয়েছেন। তাঁদের আশা, এই নিয়মে ভর করে ভাত রান্না করলেই কমবে মেদ।
পদ্ধতি:
ভাতের জল ফুটতে দিন। জল ফুটে উঠলে চাল দেওয়ার আগেই তাতে মেশান নারকেল তেল। আধ কাপ চালের ভাতে এক চা-চামচ নারকেল তেল মেশাতে হবে। চালের পরিমাণ অনুপাতে নারকেল তেলের পরিমাণও হ্রাস-বৃদ্ধি হবে। রান্না হলে তা খাওয়ার আগে অন্তত ১২ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। খাওয়ার আগে পরিমাণ মতো গরম করে নিন।
ব্যস, তা হলেই মেদকে ফাঁকি দিয়ে দেদার ভাত খাওয়ার লাইসেন্স দিতে পারেন জীবনকে!