কুণাল সরকার ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।
আসর বসেছিল সত্যজিৎ রায়ের বিলেত যোগ নিয়ে। কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনে। সেখানেই সত্যজিতের ‘সায়েন্স ফিকশন’ এবং গোয়েন্দা গল্পের কথা উঠে এল। আর প্রফেসর শঙ্কুর কথা উঠতেই আলোচনা ঘুরল সিনেমার দিকে।
শঙ্কুকে নিয়ে সিনেমায় কাজ হয়নি, এমন নয়। কিন্তু বাঙালি মনে যতটা দাগ কেটেছে সত্যজিতের ফেলুদা, ততটাও জায়গা করতে পারেনি তাঁর বিজ্ঞান ভিত্তিক গল্প। আর সে প্রসঙ্গেই অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আক্ষেপ করেন, ‘‘আসলে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির তো তত বাজেট নেই। বিজ্ঞান ভিত্তিক কোনও ছবি বানাতে গেলে প্রযুক্তির সাহায্য জরুরি। তাতে অনেকটাই খরচ হয়। সে টাকা আর এখানে কোথায়!’’ তবু যে চেষ্টা হয়েছে, তাতেই খুশি অভিনেত্রী। মনে করান মার্ভেলের কথা। সে সব ছবির প্রযুক্তি এখানে আনা গেলে সত্যজিতের বিজ্ঞান ভিত্তিক গল্প নিয়েও দারুণ সব ছবি হতে পারত বলে আলোচনায় মগ্ন হন গুণিজনেরা।
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণার সঙ্গে আড্ডায় বসেছিলেন চিকিৎসক কুণাল সরকার এবং কলকাতায় ব্রিটেনের ডেপুটি হাইকমিশনার নিক লো। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনের কর্মী সন্দীপ চৌধুরী।
ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনে বক্তারা।
সত্যজিতের জীবনের নানা পর্যায়ের ঘটনা তুলে ধরেছে সন্দীপের আঁকা কিছু ছবি। তা ঘিরেই এগনো হয় কথা। আলোচনায় ঘুরে ফিরে আসে ‘পথের পাঁচালী’ তৈরির আগের সময়। বিলেতে তখন কত দিন কাটিয়েছিলেন সত্যজিৎ?
সেখান থেকেই ফিরে ফিরে আসে বিলেতের সংস্কৃতির প্রভাব। যা সত্যজিতের সিনেমা, রচনায় নানা ভাবে দেখা গিয়েছে। যেমন বিলেতের দুই প্রখ্যাত বিজ্ঞানধর্মী উপন্যাস লেখক এইচ. জি. ওয়েল্স আর জুল ভার্নের কথা তুলে আনেন নিক ও কুণাল। নিক বলেন, ‘‘তাঁদের সায়েন্স ফিকশনের সঙ্গে কোথাও কোথাও সত্যজিতের ভাবনাতেও মিল পাওয়া যায়।’’ কুণাল তুলে ধরেন সত্যজিতের জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিলেতের সংস্কৃতির প্রভাবের কথা। তার পরই ওঠে সত্যজিতের বিজ্ঞান-চিন্তা। প্রফেসর শঙ্কুর প্রসঙ্গ।
শঙ্কু নিয়ে আরও অনেক ছবি হলে মন্দ হত না, মত বক্তাদের। মনে মনে একমত শ্রোতারাও। কিন্তু সঙ্কটের কথা তখনই মনে করান অভিনেত্রী।
তবে চলচ্চিত্র পরিচালকের সৃষ্টির অন্যান্য দিক আলোচনায় তুলে আনতে পেরে খুশি উপস্থিত সকলেই। নিক বলেন, ‘‘সত্যজিতের গুণের কোনও অন্ত ছিল না। নানা ধরনের গুণ ছিল তাঁর।’’ সেই ব্যক্তির জন্ম মাসের এক সন্ধ্যায় সে সব নিয়ে আলোচনা করতে পেরে খুশি নিক।