ব্যাঙ্কিংয়ে কেরিয়ার গড়তে

এখনকার ব্যাঙ্কিং পরীক্ষাগুলিতে থাকে একাধিক ধাপ। পড়তে হয় হরেক বিষয়। কী ভাবে এই সব পরীক্ষায় জন্য নিজেকে তৈরি করতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করলেন বিশেষজ্ঞরা। শুনলেন সৌরজিৎ দাসচারপাশে কী ঘটছে খবর রাখতে হবে। মোটামুটি গত ছ’মাস থেকে এক বছর সারা দুনিয়ায় কী ঘটেছে তা যেন নখদর্পণে থাকে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share:

আজকাল অনেক ছেলেমেয়েই ব্যাঙ্কিং, ইনশিয়োরেন্স-এর মতো ক্ষেত্রে নিজেদের কেরিয়ার গড়তে চায়। পরীক্ষাগুলির ধাঁচ কিন্তু উনিশ-বিশ। ব্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক (পিএসবি) এবং রিজিয়োনাল রুরাল ব্যাঙ্কগুলিতে প্রোবেশনারি অফিসার, ক্লারিকাল ক্যাডার, অফিসার, অফিস অ্যাসিসট্যান্ট, স্পেশালিস্ট অফিসার ইত্যাদি পদের জন্য সারা বছর বিভিন্ন পরীক্ষা আয়োজন করে ইনস্টিটিউট অব ব্যাঙ্কিং পার্সোনেল সিলেকশন (আইবিপিএস), স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই), রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই), ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট (নাবার্ড) সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্ক।

Advertisement

এ বছরের এসবিআই পিও (স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, প্রোবেশনারি অফিসার, ২০০০ পদের জন্য) এবং এসবিআই ক্লারিকাল-এর প্রিলিমিনারি আর মেন (Main) পরীক্ষা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। আইবিপিএস পিও ২০১৯ (ইনস্টিটিউট অব ব্যাঙ্কিং পার্সোনেল, প্রোবেশনারি অফিসার, এসবিআই ছাড়া অন্যান্য পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্কগুলির জন্য) প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হওয়ার কথা অক্টোবরে আর মেন নভেম্বরের শেষে। আইবিপিএস ক্লারিকাল হওয়ার কথা ডিসেম্বরে আর মেন পরের বছর জানুয়ারিতে।

ইনশিয়োরেন্স সেক্টরেও দ্য ন্যাশনাল ইন্ডিয়া অ্যাশিয়োরেন্স কর্পোরেশন লিমিটেড (এনআইএসিএল), এনএলসি, লাইফ ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন (এলআইসি), জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন (জিআইসি) ইত্যাদি সংস্থা পরীক্ষা নিয়ে থাকে। প্রায় সব পরীক্ষাই কম্পিউটার-বেসড। তাই ছাত্রদের কম্পিউটারে কাজ করার কিছুটা অভিজ্ঞতা থাকা ভাল।

Advertisement

আইবিপিএস এবং এসবিআই পিও পরীক্ষার তিনটি ধাপ:

• প্রিলিমিনারি টেস্ট: এ বছরের এসবিআই পিও-র পরীক্ষাগুলিতে ছিল ইংলিশ ল্যাংগোয়েজ (৩০টি প্রশ্ন), রিজনিং এবিলিটি (৩৫টি প্রশ্ন) আর নিউমেরিকাল এবিলিটি (৩৫টি প্রশ্ন)। প্রত্যেকটি প্রশ্নের মান ১ নম্বর। মোট নম্বর ১০০। সময় ২০ মিনিট প্রতি সেকশন, সব মিলিয়ে ১ ঘণ্টা।

• মেন টেস্ট: এখানে যে যে সেকশন এসেছিল তা হল—

• রিজনিং এবিলিটি অ্যান্ড কম্পিউটার অ্যাপ্টিটিউড। প্রশ্ন ৪৫টা, মোট নম্বর ৬০, সময় ১ ঘণ্টা;

• ডেটা অ্যানালিসিস অ্যান্ড ইন্টারপ্রিটেশন। প্রশ্ন ৩৫টা, মোট নম্বর ৬০, সময় ৪৫ মিনিট;

• জেনারেল ইকনমি অ্যান্ড ব্যাঙ্কিং অ্যাওয়ারনেস। প্রশ্ন ৪০টা, মোট নম্বর ৪০, সময় ৩৫ মিনিট;

• ইংলিশ ল্যাঙ্গোয়েজ। প্রশ্ন ৩৫টা, মোট নম্বর ৪০, সময় ৪০ মিনিট।

মেন-এ মোট প্রশ্নসংখ্যা ১৫৫ আর মোট নম্বর ২০০। সময় সব মিলিয়ে ৩ ঘণ্টা। এ ছাড়া আধ ঘণ্টার ডেসক্রিপটিভ রাইটিং-এরও একটা অংশ থাকে।

• ইন্টারভিউ: এসবিআই পিও-তে ইন্টারভিউ ছাড়া গ্রুপ ডিসকাশন অথবা গ্রুপ টাস্ক-ও পরিচালনা করে।

পুরো সিলেবাসকে মূলত চারটে ভাগে ভাগ করা যায়— ১) লজিক্যাল রিজনিং, ২) ইংলিশ ল্যাঙ্গোয়েজ, ৩) নিউমেরিকাল এবিলিটি অ্যান্ড ডেটা অ্যানালিসিস ও ৪) জেনারেল অ্যাওয়ারনেস ও কম্পিউটার অ্যাওয়ারনেস।

লজিক্যাল রিজনিং

টাইম কলকাতা-র প্রশিক্ষক দীপাঞ্জন ভৌমিকের মতে, রিজনিং বিভাগের উদ্দেশ্য ছাত্রছাত্রীদের চিন্তার স্বচ্ছতা বিচার। অধিকাংশ পেপারে এখন অ্যানালিটিকাল পাজল (সিটিং/ফ্লোর অ্যারেঞ্জমেন্ট, ডিস্ট্রিবিউশন ইত্যাদি) বেশি থাকে। এ ছাড়াও ডিডাকশনস, সিমবল্‌স অ্যান্ড নোটেশনস, কোডিং ডিকোডিং, ব্লাড রিলেশনস, ডিরেকশন সেন্স, র‌্যাঙ্কিং, ডেটা সাফিশিয়েন্সি, ডেটা কম্পারিজন, ভার্বাল রিজনিং, ডিসিশন মেকিং, ইনপুট আউটপুট-এর মতো বিষয় থেকে প্রশ্ন আসে।

অনেক প্রশ্নই এখন একাধিক অধ্যায় মিলিয়ে করা হয়। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরো, একটা পাজল-এ আট জন ব্যক্তিকে একটা গোলাকার টেবিল ঘিরে বসাতে হবে। তার সঙ্গে এটাও দেওয়া আছে যে ওরা একই পরিবারের আর বিভিন্ন পেশায় আছে। ফলে এই প্রশ্নে সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট ছাড়াও কিন্তু ব্লাড রিলেশন আর ডিস্ট্রিবিউশন-এর (অর্ডার প্রফেশন বোঝা) কনসেপ্টও দরকার। তাই পরীক্ষার্থীদের উচিত, সিলেবাস ধরে সব টপিক আগে দেখে নিয়ে তার পর বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন প্র্যাকটিস করা। আ হ্যান্ডবুক অব ভার্বাল অ্যান্ড নন-ভার্বাল রিজনিং— আর এস অগ্রবাল-এর মতো বইগুলি থেকে প্রশ্নোত্তর করা যেতেই পারে। তবে এটা মাথায় রেখো, গত কয়েক বছর ধরে পরীক্ষায় আর নন-ভার্বাল রিজনিং-এর প্রশ্ন দেওয়া হচ্ছে না। তাই ভার্বাল রিজনিং অংশটাই ভাল করে প্র্যাকটিস করতে হবে।

যেহেতু পরীক্ষায় কম সময়ে বেশি প্রশ্নোত্তর করতে হয়, তাই প্রশ্ন অ্যাটেম্পট করার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলি, প্রথমে ছোট ১-২ লাইনের প্রশ্ন (যেমন, কো়ডিং-ডিকোডিং, ডিরেকশন, ব্লাড রিলেশন ইত্যাদি) করে তার পর সিম্বল নোটেশন বেসড কনক্লুশনস (ইনইকুয়ালিটিস), ডিডাকশনস, ইনপুট আউটপুট-এর প্রশ্নে হাত দাও। শেষে বড় সেট-বেসড প্রশ্ন (যেমন পাজলস) করো। তা ছাড়া, ডেটা সাফিশিয়েন্সি আর ভার্বাল রিজনিং থেকে যে প্রশ্ন আসে, তা করতে বেশ সময় লাগে। তাই ওগুলো শেষের জন্য রাখা উচিত। নেগেটিভ মার্কিং থাকে বলে কোনও প্রশ্নই আন্দাজে করা উচিত নয়। আবার কোনও প্রশ্ন আটকে গেলে, সেটা ছেড়ে দিয়ে অন্য প্রশ্নে চলে যাও।

ইংলিশ ল্যাঙ্গোয়েজ

প্রজ্ঞান রায়, যিনি টাইম কলকাতা-য় এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন, জানালেন, সরকারি ব্যাঙ্কের পরীক্ষাগুলির দুটি ভাগেই (প্রিলিমিনারি এবং মেন) ইংলিশ ল্যাংগোয়েজের প্রশ্ন থাকে এবং কিছু পিও পরীক্ষাতে থাকে ডেস্ক্রিপ্টিভ রাইটিং। আইবিপিএস পিও এবং এসবিআই পিও-র প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলিতে ৩০টি (মূল ১০০টি প্রশ্ন, ১ ঘণ্টা) করে ইংলিশ ল্যাংগোয়েজের প্রশ্ন থাকছে। সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলিতে ছিল রিডিং কম্প্রিহেনশন, ক্লোজ টেস্ট ও সেন্টেন্স কারেকশন বা গ্রামারের প্রশ্ন। দুই সংস্থারই মেন পরীক্ষাগুলিতে থাকছে ৩৫টি (মূল ১৫৫টি প্রশ্ন, ৩ ঘণ্টা) করে ইংলিশ ল্যাংগোয়েজের প্রশ্ন। সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলিতে ছিল রিডিং কম্প্রিহেনশন, প্যারাগ্রাফ জাম্বলিং, সামারি, শূন্য-স্থান-পূর্ণ এবং সেন্টেন্স কারেকশন বা গ্রামারের প্রশ্ন। অন্যান্য পরীক্ষাগুলিতেও মোটামুটি এই ধাঁচের প্রশ্নই থাকে, তবে প্রশ্নের সংখ্যা পরীক্ষা অনুযায়ী আলাদা। তুলনামূলক ভাবে প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলি মেন-এর থেকে অনেকটাই সহজ। তবে গত দু-তিন বছরে প্রায় প্রতিটি পরীক্ষাতেই প্রশ্নের প্যাটার্ন ও সংখ্যা পালটেছে। আগামী পরীক্ষাগুলিতে অন্য ধাঁচের প্রশ্নপত্র আসাটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। একই ভাবে আইবিপিএস পিও এবং এসবিআই পিও-র ডেস্ক্রিপ্টিভ রাইটিং-এ সম্প্রতি একটি এসে রাইটিং এবং একটি লেটার রাইটিং আসছে– সময় ৩০ মিনিট, মার্কস ২৫ (আইবিপিএস পিও,) ৫০ (এসবিআই পিও।) ডেস্ক্রিপ্টিভ রাইটিং-এর উত্তর কম্পিউটারে টাইপ করতে হবে, তাই সেটার অভ্যাস থাকা দরকার। মনে রাখবে এই বিভাগে অন্যান্য প্রশ্ন, যেমন প্রিসি বা প্যারাগ্রাফ রাইটিং আসতেই পারে।

ব্যাঙ্কের পরীক্ষার ইংলিশ ল্যাংগোয়েজের প্রস্তুতির জন্য প্রথমত, নিজের বেসিকস ঠিক রাখতে হবে। নিজের ভোকাবুলারি বাড়ানো এবং গ্রামারের সাধারণ নিয়মগুলি শিখে নেওয়া খুবই জরুরি। প্রতিদিন নিয়ম করে খবরের কাগজ পড়তে হবে। সময় পেলেই ভাল জার্নাল থেকে আর্টিকল, ভাল ইংরেজি বই পড়তে হবে। দেখতে হবে কোথায় কোন শব্দ কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভোকাবুলারি বাড়ানোর জন্য নরম্যান লিউইস-এর ‘ওয়ার্ড পাওয়ার মেড ইজি’ এবং গ্রামারের জন্য ডেভিড গ্রিন-এর ‘কন্টেমপোরারি ইংলিশ গ্রামার’ কাজে আসতে পারে। অভিধান মুখস্থ করে ভোকাবুলারি বাড়ানো কাজে লাগবে না। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত প্রশ্ন প্র্যাকটিস করতে হবে যার দ্বারা বেসিকসের জ্ঞানটা কাজে লাগানো যায়। তৃতীয়ত, নিয়মিত মক টেস্ট দিয়ে, পরীক্ষার পরে কোথায় কোথায় খামতি থাকছে দেখে নিয়ে সেগুলো ঠিক করে নিতে হবে। এই ধরনের কম্পিটিটিভ পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিন্তু পোস্ট টেস্ট অ্যানালিসিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি নিয়মিত করলেই তোমরা ভার্বাল এবিলিটিতে সড়গড় হবে।

নিউমেরিকাল এবিলিটি অ্যান্ড ডেটা অ্যানালিসিস

টাইম কলকাতা-র প্রশিক্ষক প্রদীপ গোস্বামী জানালেন, এসবিআই পিও ও এসবিআই পিও-র প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নিউমেরিকাল এবিলিটিতে সাধারণত কোয়াড্রেটিক কম্পারিজন, ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন, নাম্বার সিরিজ, অ্যাপ্রক্সিমেশন এবং অ্যারিথম্যাটিক থেকে প্রশ্ন করা হয়। এ বছরের এসবিআই পিও-র প্রিলিম পরীক্ষাগুলিতে ডেটা ইন্টারপ্রিটেশনে পাই চার্ট, বার গ্রাফ, কেসলেটস দিয়ে পাঁচটা করে তিনটে সেট প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অ্যারিথমেটিক (ইকুয়েশন, রেশিয়ো প্রোপোরশন, পার্সেন্টেজ, প্রফিট অ্যান্ড লস, টাইম অ্যান্ড ওয়ার্ক, টাইম অ্যান্ড ডিস্ট্যান্স, মেনসুরেশন এবং অ্যাভারেজ) থেকে ১০টি প্রশ্ন, নাম্বার সিরিজ থেকে ৫টা ও কোয়াড্রেটিক কম্পারিজন থেকে ৫টা প্রশ্ন এসেছে।

কী ভাবে নেবে এই বিভাগের জন্য প্রস্তুতি? কয়েকটা জিনিস রীতিমতো মুখস্থ রাখতে হবে— 1 থেকে 20 পর্যন্ত নামতা, 1/2 থেকে 1/20 পর্যন্ত রেসিপ্রোকাল ভ্যালু, 22 থেকে 302 পর্যন্ত ভ্যালু এবং 23 থেকে 153-এর ভ্যালু। অঙ্কের ক্ষেত্রে যে টপিকগুলোর কথা আগেই বলেছি সেগুলির পাশাপাশি কোয়াড্রেটিক ইকুয়েশন, প্রোবাবিলিটির অঙ্কও ভাল করে প্র্যাকটিস করতে হবে। ডেটা ইন্টারপ্রিটেশনে সড়গড় হতে হবে ট্যাবুলার ডেটা, গ্রাফিকাল পাই, লাইন বা বার চার্ট, কেসলেটস, ভেন ডায়াগ্রামের মতো প্রশ্নগুলিতে। নিউমেরিকাল এবিলিটি প্র্যাকটিসের জন্য আর এস আগরওয়াল আর এস ধিলোঁ-এর ‘ডেটা ইন্টারপ্রিটেশন’ এবং অভিজিৎ গুহ-র ‘অবজেকটিভ ম্যাথমেটিক্স’-এর মতো বাজারচলতি বইগুলি দেখতে পারো।

ব্যাঙ্কিং-এর এই সব পরীক্ষায় সময় একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৩৫টা প্রশ্নের জন্য ৪৫ মিনিট দেওয়া থাকে। ফলে নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যাতে কোনও প্রশ্নে খুব বেশি সময় দিতে না হয়। তাড়াতাড়ি কোনও প্রশ্ন পড়ে বুঝে যেতে হবে সেটা পারবে কি পারবে না। ডিআই-এর যেগুলো সেট প্রশ্ন অর্থাৎ একটা প্রশ্নেই পাঁচটা প্রশ্ন থাকছে, সেগুলো কখনও শেষে করবে না। এই ধরনের প্রশ্ন করতে কিছুটা সময় লাগে বটে, কিন্তু ঠিকমতো করতে পারলে পুরো নম্বর পাওয়া যায়।

জেনারেল অ্যাওয়ারনেস ও কম্পিউটার অ্যাওয়ারনেস

প্রায় সব ব্যাঙ্কিং পরীক্ষাতেই জেনারেল অ্যাওয়ারনেস থেকে প্রশ্ন আসে। জেনারেল অ্যাওয়ারনেসের কোনও বাঁধাধরা সিলেবাস হয় না। তাই প্রার্থীকে সব কিছুই প্রায় জানতে হয়। ব্যাঙ্কিং পরীক্ষায় এই বিভাগ থেকে মূলত চার ধরনের প্রশ্ন আসে—

• ব্যাঙ্কিং অ্যাওয়ারনেস

• বেসিক‌স অব মাইক্রোইকনমিক্স

• কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

• স্ট্যাটিক জেনারেল নলেজ

টাইম কোলকাতা-র প্রশিক্ষক দেবার্ক নন্দীর মতে, পরীক্ষায় জেনারেল অ্যাওয়ারনেস-এর অধিকাংশ প্রশ্নই আসে ব্যাঙ্কিং অ্যাওয়ারনেস থেকে। দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্কিংয়ের কাজকর্ম, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া-র ক্ষমতা ও কাজ, বিভিন্ন ধরনের ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, তাদের সংজ্ঞা— মোট কথা ভারতীয় ব্যাঙ্কিং সিস্টেম সম্পর্কে বিশদে পড়াশোনা করতে হবে। জিডিপি, জিএনপি, এনএনপি, ন্যাশনাল ইনকাম, ইনফ্লেশন, ডিফ্লেশন, স্ট্যাগফ্লেশন, রিসেশন, এমপ্লয়মেন্ট, মানি মার্কেট, ক্যাপিটাল মার্কেট-এর মতো ম্যাক্রোইকনমিক্স-এর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কনসেপ্ট জেনে রাখা চাই। মনিটারি পলিসি, ফিসকাল পলিসি বিশদে জানতে হবে। আরবিআই-এর রেপো রেটের মতো সব ক’টি রেট জানা দরকার এবং ভারতীয় অর্থনীতিতে এদের প্রভাব জানা আবশ্যক।

অন্য দিকে, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স-এর জন্য চারপাশে কী ঘটছে খবর রাখতে হবে। মোটামুটি গত ছ’মাস থেকে এক বছর সারা দুনিয়ায় কী ঘটেছে তা যেন নখদর্পণে থাকে। নিয়মিত ভাল ইংরেজি সংবাদপত্র পড়া, খবর দেখা, বিশেষত ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত খবরগুলো আলাদা করে নজর দিতে হবে। পিআইবি-এর ওয়েবসাইটেও চোখ রাখতে হবে, সরকারি যোজনাগুলো জানার জন্য। স্ট্যাটিক জিকে-র জন্য মাধ্যমিক পর্যন্ত যা যা পড়েছ অর্থাৎ, হিস্ট্রি, জিয়োগ্রাফি, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, লাইফ সায়েন্স, পলিটি ইত্যাদি ঝালিয়ে নেওয়া দরকার। ন্যাশনাল পার্ক, ভারতীয় কলা, সঙ্গীত, নৃত্যের মতো বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া দরকার। জেনারেল অ্যাওয়ারনেস-এর জ্ঞান বাড়াতে কম্পিটিশন সাকসেস রিভিউ, প্রতিযোগিতা দর্পণ-এর মতো পত্রিকাগুলি কাজে আসতে পারে। স্ট্যাটিক জিকে-র জন্য দেখতে পারো মনোরমা ইয়ারবুক-এর মতো বইগুলি।

কমপিউটার অ্যাওয়ারনেসের প্রাধান্য অপেক্ষাকৃত কমলেও, এই বিষয়টি একেবারেই অবহেলা করা যাবে না। বেসিক কম্পিউটার, এমএস অফিস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডেটাবেস, কম্পিউটার সম্পর্কিত মর্ডান টেকনোলজিগুলি জানা জরুরি। মনে রাখা দরকার, কম্পিউটার কিন্তু সিলেবাসের অঙ্গ। তাই এই বিষয়ে নিয়মিত চর্চা করা আবশ্যক। লুসেন্ট অথবা আরিহান্তের কম্পিউটারের বইগুলি দেখা যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement