সমালোচনার মুখে অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একাধিক ধর্মস্থান ও স্কুলে হামলার অভিযোগ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে এ বার সরাসরি ডেকে পাঠিয়ে নির্দেশ দিলেন দিল্লির পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্সিকে।
শুক্রবার ভোরে দিল্লির অভিজাত বসন্ত বিহার এলাকায় হোলি চাইল্ড অক্সিলিয়াম স্কুলে হামলা হয়। পুলিশের অবশ্য দাবি, এটি খ্রিস্টান স্কুলে হামলার ঘটনা নয়, ওই স্কুলে ডাকাতি হয়েছে। প্রিন্সিপ্যালের অফিস লন্ডভন্ড করে বেশ কিছু টাকা নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ছ’টি সিসিটিভি ক্যামেরাও লুঠ করেছে তারা। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ওই স্কুলের প্রাক্তনী। খবর পেয়ে স্কুলে যান তিনি। দেখা করেন প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গেও।
পুলিশ যা-ই বলুক, হোলি চাইল্ড অক্সিলিয়ামের ঘটনাকে খ্রিস্টান স্কুলে হামলার ঘটনা হিসেবেই দেখছে বেশ কিছু শিবির। গত তিন মাসে দিল্লিতে একাধিক গির্জায় হামলার ঘটনা ঘটে। ফলে, খ্রিস্টানদের উপরে পরিকল্পিত হামলার ছকের অভিযোগ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ওই সম্প্রদায়ের নেতারা। এ নিয়ে গত কয়েক মাসে নানা মহলে ক্ষোভও জমছিল। কিন্তু তার থেকেও বেশি প্রশ্ন উঠছিল এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে। খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দিল্লি সফরকালে এবং পরে দেশে ফিরে ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে মন্তব্য করেন। একটি মার্কিন সংবাদপত্রেও এ নিয়ে মোদী-সরকারকে কটাক্ষ করা হয়। তার পরেই আজ সক্রিয় হন মোদী।
আজ পুলিশ কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়ে হামলার ঘটনাগুলির তদন্ত দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব এল সি গয়ালের সঙ্গেও। এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে টুইটারে জানিয়েছে দিল্লির নয়া শাসক দল আপও। রাজনীতিকদের মতে, দিল্লির তখ্ত এখন আপের দখলে। কিন্তু দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। তাই এই বিষয়ে বিরোধীদের পাশাপাশি কেন্দ্রকে নিশানা করতে পারেন অরবিন্দ কেজরীবালও। ফলে, আজ সরাসরি পুলিশ কমিশনারকে ডেকে কড়া বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী।
দিল্লির স্কুলে হামলার ঘটনার কথা সংবাদমাধ্যমে প্রচারের পরেই জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে স্কুলে জঙ্গি হামলার খবর রটে। যদিও পরে দেখা যায়, সেটি নেহাতই গুজব।