সম্ভবত লড়বেন না চিদম্বরম, প্রার্থী হয়তো পুত্র

লোকসভার লড়াই থেকে ইতিমধ্যেই সরে দাঁড়িয়েছেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁর পুত্র জয়ন্তকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না হলে হুবহু সেই পথে হাঁটতে চলেছেন মনমোহন মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী পালানিয়প্পন চিদম্বরমও। কংগ্রেস সূত্রে খবর, তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা লোকসভা কেন্দ্র থেকে অর্থমন্ত্রীর পুত্র কার্তি চিদম্বরমকেই সম্ভবত এ বার প্রার্থী করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০২:১৮
Share:

লোকসভার লড়াই থেকে ইতিমধ্যেই সরে দাঁড়িয়েছেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। হাজারিবাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁর পুত্র জয়ন্তকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। শেষ মুহূর্তে কোনও পরিবর্তন না হলে হুবহু সেই পথে হাঁটতে চলেছেন মনমোহন মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী পালানিয়প্পন চিদম্বরমও। কংগ্রেস সূত্রে খবর, তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা লোকসভা কেন্দ্র থেকে অর্থমন্ত্রীর পুত্র কার্তি চিদম্বরমকেই সম্ভবত এ বার প্রার্থী করা হবে।

Advertisement

লোকসভা ভোটে হাওয়া বেগতিক দেখে কংগ্রেসের অনেক তাবড় নেতাই প্রার্থী হতে চাইছেন না। অবশ্য সকলকেই যে রাহুল গাঁধী রেয়াত করছেন, এমন নয়। ভোটে লড়তে অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুদুচেরি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীকে। ছাড় পাননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধিনসা পটেলও। আর এক অনিচ্ছুক, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারিকে লুধিয়ানা থেকে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে এখনও চাপ দিচ্ছে হাইকম্যান্ড।

কংগ্রেস সূত্রে খবর, হাতে গোনা যে ক’জনকে রাহুল রেহাই দিতে চলেছেন, তাঁদের মধ্যে চিদম্বরম অন্যতম। কারণ, শিবগঙ্গা আসনে চিদম্বরমের জয়ের সম্ভাবনা এ বার নিতান্তই ক্ষীণ। একে তো তামিলনাড়ুতে কোনও জোটসঙ্গী পায়নি কংগ্রেস। তার ওপর গত লোকসভা ভোট থেকেই চিদম্বরমের ওপর খাপ্পা এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। গত বার শেষ মুহূর্তে ভোট গণনায় কারচুপি করে চিদম্বরম তাঁর প্রার্থীকে হারিয়েছিলেন বলে অভিযোগ জয়ার। তাই এ বার তাঁকে হারাতে কোমর বেঁধেছে এডিএমকে। সত্যিই চিদম্বরম হেরে গেলে তা ইন্দ্রপতনের সামিল হবে। সম্ভাব্য সেই অস্বস্তিই এড়াতে চাইছে কংগ্রেস।

Advertisement

শরিক না পেয়ে তামিলনাড়ুর সব আসনেই প্রার্থী দিচ্ছে কংগ্রেস। প্রার্থী ঘোষণা অবশ্য হয়নি। তবে চিদম্বরমকে রেহাই দেওয়ার পর জাহাজমন্ত্রী জি কে ভাসান এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজনও ভোটে দাঁড়াতে চাইছেন না। এঁরা দু’জন অবশ্য রাজ্যসভার সাংসদ। তাই তাঁদের আর্জিও সম্ভবত শুনবে দল। তবে সূত্র বলছে, রাজ্যসভার আর এক সাংসদ মণিশঙ্কর আইয়ারকে তামিলনাড়ুর মাইলাদুথুরাই থেকে প্রার্থী করা হতে পারে।

তামিলনাড়ু-জট সামলানোর পাশাপাশি বারাণসী-রহস্যও জিইয়ে রেখেছেন রাহুল। কংগ্রেস সূত্রে আজও বলা হয়েছে, ওই আসনে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মজবুত প্রার্থী দেওয়া হবে। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, বারাণসীতে মূলত তিনটি নাম নিয়ে বিবেচনা চলছে। এমন প্রার্থী নাকি কংগ্রেস দেবে যে বিরোধীরা চমকে যাবে।

নানা জল্পনার মধ্যে কেউ সচিন তেন্ডুলকরের কথা, কেউ প্রিয়ঙ্কা বঢরার কথা বলছেন। তার মধ্যেই আবার আজ দিগ্বিজয় সিংহ ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, দল চাইলে তিনি মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে প্রস্তুত। আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ শর্মাও বলেছেন, তিনিও বারাণসী পাড়ি দিতে তৈরি। অমৃতসর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী অরুণ জেটলির বিরুদ্ধেও ওজনদার প্রার্থী দিতে চাইছে কংগ্রেস। এ ব্যাপারে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহকে প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি এখনও ঠিক রাজি নন।

কংগ্রেসের এক নেতার ব্যাখ্যা রাহুলের লক্ষ্য হল বিজেপির তাবড় নেতার বিরুদ্ধে ওজনদার প্রার্থী দেওয়া, যাতে নিজেদের আসন বাঁচাতে তাঁদের অনেকটা সময় দিতে হয়। যেমন গাজিয়াবাদে রাজ বব্বরকে প্রার্থী করার উদ্দেশ্য ছিল বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহকে বেগ দেওয়া। কিন্তু রাজনাথ গাজিয়াবাদ থেকে সরে লখনউয়ে প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি রীতা বহুগুণাকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। গত লোকসভা ভোটে লখনউয়ে মাত্র কুড়ি হাজার ভোটে হেরেছিলেন রীতা। কাজেই আশা রয়েছে তাঁকে ঘিরে। আবার পশ্চিম দিল্লিতে বর্তমান সাংসদ মহাবল মিশ্রর পরিবর্তে প্রার্থী করা হতে পারে অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীকে। কংগ্রেস সূত্র বলছে, সম্ভবত মোদী অন্য কোন আসনটিতে লড়বেন, তা দেখে নিয়েই বারাণসী ও অমৃতসরে একই সঙ্গে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement