কোনও ধর্ষক নয়, নির্ভয়ার পরিণতির জন্য দায়ী তিনি নিজেই জেলে বসে দিল্লি ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত মুকেশ সিংহের এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে একটি বাসে নির্ভয়াকে গণধর্ষণের পরে তাঁর উপরে ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়েছিল মুকেশ-সহ ছ’জন। ওই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দু’সপ্তাহ পরে হাসপাতালে শেষ পর্যন্ত প্রাণ দিতে হয়েছিল নির্ভয়াকে। তিন বছর আগেকার সেই ঘটনায় কেঁপে উঠেছিল দিল্লি-সহ গোটা দেশ। আগামী ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ওই দিন একটি তথ্যচিত্রে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দেওয়া মুকেশের ওই সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হবে। কিন্তু তার আগেই মুকেশের এ হেন বিতর্কিত মন্তব্য প্রকাশ্যে আসায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
শুধু নির্ভয়ার দিকে আঙুল তুলেই ক্ষান্ত হয়নি মুকেশ। আরও এমন অনেক কথা বলেছে। জেলবন্দি এই অপরাধী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, ‘জঘন্য’ ওই অপরাধের জন্য এতটুকু অনুতপ্ত নয় সে। তার বক্তব্য, নির্ভয়াকে তারা মারতে চায়নি। ওটা নাকি ‘দুর্ঘটনা।’ মুকেশের প্রশ্ন, “মেয়েটিকে যখন ধর্ষণ করা হচ্ছে, তখন ও আমাদের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করল কেন?” তার দাবি, নির্ভয়ার চুপ করে থাকা উচিত ছিল। তা হলে হয়তো ধর্ষণের পরে সে আর তার বন্ধুরা ওঁকে ফেলে রেখে চলে যেত। আর মেয়েটির বন্ধুকেই হয়তো শুধু মারধর করা হত!
কিন্তু নির্ভয়া আর তাঁর বন্ধু প্রতিবাদ করেছিলেন। তাই তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়া হয়েছে। মুকেশের আরও বিস্ফোরক মন্তব্য, “কোনও ভদ্র মেয়ে রাত ন’টার সময় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় না। ধর্ষণে এক জন ছেলের চেয়ে মেয়ের ভূমিকা অনেক বেশি। ছেলে-মেয়ে সমান নয়। মেয়েরা বাড়ির কাজকর্ম করবে। রাতে ডিস্কে বা বার-এ ভুলভাল পোশাক পরে উল্টোপাল্টা কাজ করে বেড়াবে না। ২০ শতাংশ মেয়েই আদতে ভাল।” গণধর্ষণের জন্য মুকেশকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ব্যক্তি তার মৃত্যুদণ্ড মকুবের আর্জি জানিয়েছে। সে মনে করে, তাকে বা তার মতো অন্য ধর্ষকদের ফাঁসি দিলেও ভবিষ্যতে ধর্ষণের ঘটনা বাড়বে বই কমবে না। মুকেশের মন্তব্য, “মৃত্যুদণ্ড মেয়েদের বিপদ আরও বাড়াবে। আগে কেউ ধর্ষণ করে বলত, ‘ছেড়ে দাও মেয়েটাকে। ও কাউকে কিছু বলবে না।’