সংসদের হাজিরা খাতায় পিছনের বেঞ্চিতে রাহুল

দলের চার জন একশোয় একশো। অথচ দলের কাণ্ডারী নিজে পিছনের সারিতে। পঞ্চদশ লোকসভার মেয়াদ ফুরোতে মাত্র কয়েক দিন বাকি। বিদায়ী লোকসভায় চার জন কংগ্রেস সাংসদ এ বার রেকর্ড করেছেন। সংসদে তাঁদের হাজিরা একশো শতাংশ। কংগ্রেসের মধ্যে সবথেকে কম উপস্থিতি কার? রাহুল গাঁধী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৪ ০৯:৫০
Share:

দলের চার জন একশোয় একশো। অথচ দলের কাণ্ডারী নিজে পিছনের সারিতে। পঞ্চদশ লোকসভার মেয়াদ ফুরোতে মাত্র কয়েক দিন বাকি। বিদায়ী লোকসভায় চার জন কংগ্রেস সাংসদ এ বার রেকর্ড করেছেন। সংসদে তাঁদের হাজিরা একশো শতাংশ। কংগ্রেসের মধ্যে সবথেকে কম উপস্থিতি কার? রাহুল গাঁধী।

Advertisement

গত পাঁচ বছরে লোকসভায় রাহুলের হাজিরা মাত্র ৪৩%। খুব একটা এগিয়ে নেই সনিয়া গাঁধীও। খাতা বলছে, সনিয়ার উপস্থিতির হার ৪৭%। সনিয়া-রাহুল কেউ পাঁচ বছরে সরকারের কাছে প্রশ্ন করেননি। দু’জনে দু’বার করে বিতর্কে অংশ নিয়েছেন।

কিন্তু চমকে দিয়েছেন কর্নাটকের ডি কে সুরেশ, কেরলের কে পি ধনপালন, হিমাচলের প্রতিভা সিংহ এবং দিল্লির রমেশ কুমার। সুরেশ ও প্রতিভা সিংহ এক বছর আগে উপনির্বাচনে জিতে এসেছেন। কিন্তু ধনপালন ও রমেশ কুমার পাঁচ বছরই এই রেকর্ড ধরে রেখেছেন।

Advertisement

কী ভাবে এটা সম্ভব? রমেশ কুমার বলেন, “আমার স্বভাবটাই এ রকম। কোথাও যাওয়ার হলে ১৫ মিনিট আগে পৌঁছে যাই। এক মিনিট দেরিতেও কখনও পৌঁছইনি।” কোনও দিন শরীর খারাপও হয়নি? রমেশের উত্তর, “সে তো হয়েইছে। তা-ও সংসদে গিয়েছি।” কংগ্রেসের এই চার জন ‘একশোয় একশো’-র পরেই রয়েছেন বিজেপির অর্জুন রাম মেঘওয়াল। বিকানেরের এই সাংসদ ৯৯% দিন হাজির। তাঁর কথায়, “প্রথম থেকেই ঠিক করি, যত বেশি সম্ভব হাজির থাকব। অধিবেশন চলাকালীন আত্মীয়স্বজনদের বিয়ের নিমন্ত্রণ এলেও ‘না’ বলতাম।” পশ্চিমবঙ্গ থেকে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, সৌগত রায় ও সাইদুল হকের উপস্থিতি ৯০ শতাংশের বেশি। এই নব্বই ক্লাবে রয়েছেন বিজেপির আডবাণী ও সুষমা স্বরাজ এবং সপা-র শৈলেন্দ্র কুমারও।

গত পাঁচ বছরে সংসদে বেশ কয়েক বারই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, সাংসদদের অনুপস্থিতির দরুণ বিল পাশ করাতে বেগ পেতে হয়েছে সরকারকে। সনিয়া গাঁধী সব সাংসদকে হাজির থাকার জন্য হুলিয়া জারি করেছেন। তা হলে রাহুলের অনুপস্থিতি কম কেন? সুষমা স্বরাজের অভিযোগ, “রাহুল তো লোকসভায় আসেনই না। কী ভাবে সংসদ চলে, আমরা কত রাত পর্যন্ত কাজ করি, তিনি কিছুই জানেন না।”

কংগ্রেসের তরফে বিষয়টাকে খুব গুরুত্ব দিতে রাজি নন কেউ। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সূর্যেওয়ালা বলেন, “শীর্ষনেতাদের দলীয় সংগঠন ও প্রচারের কাজে সারা দেশে ঘুরে বেড়াতে হয়। বিরোধীরা যেখানে সংসদ অচল করে রাখছেন, সেখানে মানুষের মধ্যে গিয়েই কাজ করতে হয়। তা ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়েই রাহুল নিজের স্পষ্ট মতামত জানিয়েছেন।”

রাহুলের থেকেও কম হাজিরার নজির অবশ্য রয়েছে লোকসভায়। ডিএমকে-র দুই নেতা করুণানিধি-পুত্র এম কে আলাগিরি ও ডি নেপোলিয়নের হাজিরা মাত্র ৪%। তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির চন্দ্রশেখর রাও আর বিজয়া শান্তি হাজিরার হার ১৩ ও ১৪%। জয়াপ্রদা ও নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর মতো অন্য পেশা থেকে রাজনীতিতে আসা সাংসদদের হাজিরাও ৪০ শতাংশের নীচে। রাজ্যসভায় সচিন তেণ্ডুলকর ও রেখার হাজিরার হার এখনও পর্যন্ত ৩ থেকে ৪ শতাংশের বেশি নয়। শিল্পপতি বিজয় মাল্যর হাজিরাও মাত্র ৩৪ শতাংশ। অনেকেই বলছেন, অন্য পেশার সাংসদদের ক্ষেত্রে হাজিরার হার প্রায়শই কম হয়। ব্যতিক্রমও অবশ্য আছে। তৃণমূলের কে ডি সিংহেরই হাজিরা প্রায় ৯০ শতাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement