বৈঠকে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং (বাঁ দিকে), অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। বৃহস্পতিবার।— নিজস্ব চিত্র।
অসম এবং নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে সীমানা বিবাদের স্থায়ী সমাধানসূত্র খুঁজতে বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু।
আজ অসমের প্রশাসনিক কার্যাবলী প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদরাও। সেখানে রিজিজুর সঙ্গে ছিলেন উত্তর-পূর্ব উন্নয়নমন্ত্রী ভি কে সিংহ। পরে, সীমানা বিতর্ক নিয়ে আলাদা ভাবে কথাবার্তা বলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, নাগাল্যান্ডের টি আর জেলিয়াং। দু’টি রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র কমিশনার, পুলিশের ডিজি, কৃষি ও বনমন্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর দু’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৯৭১ সাল থেকে শুরু হওয়া সীমানা বিবাদ শান্তিপূর্ণ ভাবে মেটাতে অসম ও নাগাল্যান্ড কয়েকটি যৌথ পদক্ষেপ করবে। মুখ্যসচিব স্তরে নিয়মিত আলোচনা করা হবে। বিতর্কিত সীমানা সংলগ্ন দু’দিকের জেলাশাসকও মত বিনিময়ের মাধ্যমে সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। ওই এলাকায় হিংসা ছড়ানোর প্রেক্ষিতে গগৈ এবং জেলিয়াং দুঃখ প্রকাশ করে জানান, এ বার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে ইতিবাচক অধ্যায় শুরু হচ্ছে। সীমানার দু’পারে শান্তি ও স্থিতাবস্থা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ঘরছাড়াদের বাড়ি পাঠাবে প্রশাসন। মানুষের মনে সরকারের প্রতি আস্থা ফেরাতেও উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। জেলিয়াং জানান, নাগাল্যান্ডের দিক থেকে আক্রমণের পিছনে কারা রয়েছে, তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানান। সীমানা এলাকার সড়ক, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভি কে সিংহের কাছে বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ চান গগৈ।
রিজিজু জানান, সীমানা সমস্যার সমাধান ও বিতর্কিত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রও ব্যবস্থা নেবে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা যাতে হিংসা ছড়াতে না-পারে, সে দিকে কড়া নজর রাখতে হবে। নাগাল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোলাঘাটবাসীকে অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান রিজিজু।
গোলাঘাটে অশান্তি চলছেই। গত কাল থানা ঘেরাওয়ের সময় পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কয়েকটি সংগঠন এ দিন অসম বন্ধ ডেকেছিল। অ-বড়ো সংগঠনগুলিও তাতে সমর্থন জানায়। বরাক ছাড়া রাজ্যের অন্য প্রান্তে বন্ধ কার্যত সফল। কার্ফুর মধ্যেও এ দিন গোলাঘাটের তেলগরম, নুমালিগড়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়। ক্ষিপ্ত জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জখম হন ৪ সিআরপি জওয়ান। কয়েকটি জায়গায় ভিড় হঠাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। শূন্যে গুলি চালানো হয়।