ঢাকা থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে সহযোগিতার পথেই চলতে চান তিনি। আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পর ওই চুক্তি রূপায়ণের সম্ভাবনা আরও কিছুটা উজ্জ্বল হল বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত বিল যাতে দ্রুত সংসদে পাশ করানো সম্ভব হয়, সে ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। জানিয়েছেন, ওই বিল পাশের ক্ষেত্রে রাজ্যসভায় সরকারকে কক্ষ সমন্বয়ের ব্যাপারে সব রকম সহযোগিতা করবে তৃণমূল।
কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে, চলতি বাজেট অধিবেশনেই সংসদের দুই কক্ষে বিলটিকে পাশ করিয়ে নিতে। সেটা সম্ভব হলে এপ্রিলের মধ্যেই বাংলাদেশে যেতে চান মোদী। সূত্রের খবর, ওই সফরে মমতাকেও সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদী তাঁকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা চুক্তিটি রূপায়ণের প্রশ্নে তৃণমূলের সমর্থন, নিঃসন্দেহে কেন্দ্রের বাংলাদেশ-নীতিকে শক্তিশালী করবে।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ যথেষ্ট গুরুত্ব পেলেও ঠিক কী কথা হয়েছে, সে ব্যাপারে বিশদ কিছু বলতে চাননি মমতা। শুধু জানিয়েছেন যে, তাঁর ঢাকা সফরের বিষয়ে তিনি আজ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। তিস্তার জলবণ্টন ও স্থলসীমান্ত চুক্তির মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দিল্লি আসার আগেই যে তিনি এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন, সে কথাও সাংবাদিকদের জানান মমতা।
গত মাসে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে মমতা সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছিলেন, তিনি তিস্তা চুক্তির প্রশ্নে ইতিবাচক পদক্ষেপই করতে চান। তবে বিষয়টি নিয়ে যে তাড়াহুড়ো করতে চান না, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে এসেছিলেন। তবে স্থলসীমান্ত চুক্তিটি যাতে দ্রুত রূপায়িত হয়, সে ব্যাপার মমতা সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন হাসিনাকে। এ দু’টি বিষয়ে মমতা তাঁর মনোভাব মোদীকেও জানিয়েছেন।
স্থলসীমান্ত চুক্তির পথে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অবশ্য অসমের বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ওই চুক্তি জাতীয় স্বার্থেই অত্যন্ত জরুরি। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই মনস্থির করে ফেলেছে এ ব্যাপারে। অসম বিজেপির নেতাদেরই উচিত নিজেদের এলাকায় গিয়ে এই চুক্তির তাৎপর্য মানুষকে বোঝানো।