রেললাইন দেখতে ভিড় হাজারিবাগে

কাশবনের আড়ালে ভেসে আসছে রেলের ‘কু ঝিক ঝিক’। প্রাণপণে সে দিকে ছুটছে দুর্গা, অপু পথের পাঁচালির সেই ছবিই এ বার বাস্তব হাজারিবাগে। আর মাত্র ৩ দিন। তার পরই পাহাড়, জঙ্গল ঘেরা ঝাড়খণ্ডের ওই জেলার প্রত্যন্ত এলাকা দিয়ে ছুটবে রেলগাড়ি। অপু-দুর্গার মতো লাইনের ধারে জমবে অবাক ছোটদের জটলা। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৬৮ বছর পর ট্রেন পরিষেবা চালু হচ্ছে হাজারিবাগে। ১৯৯৯ সালে হাজারিবাগ-কোডারমা রেলপথের শিলান্যাস করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

হাজারিবাগ শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

হাজারিবাগ স্টেশন।—নিজস্ব চিত্র।

কাশবনের আড়ালে ভেসে আসছে রেলের ‘কু ঝিক ঝিক’। প্রাণপণে সে দিকে ছুটছে দুর্গা, অপু পথের পাঁচালির সেই ছবিই এ বার বাস্তব হাজারিবাগে।

Advertisement

আর মাত্র ৩ দিন। তার পরই পাহাড়, জঙ্গল ঘেরা ঝাড়খণ্ডের ওই জেলার প্রত্যন্ত এলাকা দিয়ে ছুটবে রেলগাড়ি। অপু-দুর্গার মতো লাইনের ধারে জমবে অবাক ছোটদের জটলা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার ৬৮ বছর পর ট্রেন পরিষেবা চালু হচ্ছে হাজারিবাগে। ১৯৯৯ সালে হাজারিবাগ-কোডারমা রেলপথের শিলান্যাস করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। তখন অখণ্ড বিহারের অঙ্গ ছিল হাজারিবাগ। সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে সময় লাগল প্রায় দু’দশক। পূর্ব-মধ্য রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি সবুজ পতাকা দেখিয়ে ওই রুটে প্রথম ট্রেন চালুর সঙ্কেত দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, হাজারিবাগ থেকে কোডারমা যেতে দু’ঘণ্টা লাগবে। ৮০ কিলোমিটার রাস্তায় থাকবে সাতটি স্টেশন, দু’টি হল্ট স্টেশন।

Advertisement

নতুন রেল পরিষেবা নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে হাজারিবাগ, বরকঠ্ঠা, বরহীর বাসিন্দাদের। হাজারিবাগ শহরে ঘুরে তা সহজেই স্পষ্ট হল। সদ্যনির্মিত স্টেশনে শেষ পর্যায়ের কাজ দেখতে আশপাশের লোকজন ভিড় জমিয়েছেন। কৌতূহলে রেল লাইন দেখছেন অনেকে। স্টেশনের সামনের রাস্তায় বসেছে হরেক জিনিসের পসরা। এলাকাবাসী কয়েক জন জানালেন, কোডারমা গিয়ে মেন লাইনের ট্রেন ধরতে হলে এত দিন দুরপাল্লার বাস, অটোরিকশাই ছিল ভরসা। কেউ কেউ যেতেন সাইকেল, এমনকী হেঁটেও। ট্রেন চালু হওয়ায় এ বার থেকে সময়, পরিশ্রম দুই-ই বাঁচবে। স্থানীয় বাসিন্দা ওম প্রকাশ বললেন, “হাজারিবাগের লোকজন শপিং-মল দেখেছেন। কিন্তু এত দিন রেলপথ দেখেননি।”

রেল সূত্রে খবর, ১৯৯৯ সালে শিলান্যাস হওয়ার পর বিভিন্ন কারণে ওই রেলপথের কাজ শেষ হয়নি। যার জেরে প্রকল্পের খরচ ৩৩২ কোটি টাকা থেকে ৯৩৫ কোটি টাকায় পৌঁছয়। পূর্ব মধ্য রেল জানিয়েছে, কয়েক মাস পর হাজারিবাগ থেকে বরকাকানা দিয়ে রেল লাইন পৌঁছবে রাঁচিতে। তার পর থেকে হাজারিবাগ দিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনও যাতায়াত করবে। রেলের এক অফিসার বলেন, “এখন রাজধানী এক্সপ্রেসের মতো রাঁচি থেকে দিল্লিগামী ট্রেন ডালটনগঞ্জ বা গোমো ঘুরে যায়। হাজারিবাগের সঙ্গে রেলপথে রাঁচি জুড়লে সেগুলির যাত্রাপথ কম হবে। তাতে লাভবান হবে রেলও।” রেলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় হাজারিবাগে এ বার পর্যটক বাড়বে। বাড়বে আনুষঙ্গিক ব্যবসাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement