সংঘর্ষ বিরতিতে থাকা মণিপুরের কুকি জঙ্গি সংগঠনগুলি লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করল। মণিপুর-আউটার আসনের বর্তমান সাংসদ তথা এ বারের কংগ্রেস প্রার্থী থাংসো বাইতের দিকে তাই পাল্লা খানিকটা ভারি হল। প্রদেশ তৃণমূল সভানেত্রী তথা কুকি নেত্রী কিম গাংতেও আউটার কেন্দ্রে প্রার্থী। কিন্তু কুকি জঙ্গিদের আশা, নির্বাচনে কংগ্রেসকে ভোট দিলে ভোটের পরে প্রতিশ্রুতি মতো স্বশাসিত কুকি রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করবে কংগ্রেস। কুকি জঙ্গিদের দু’টি যৌথ মঞ্চ হল ইউপিএফ ও কেএনও। কেএনও ও ইউপিএফ জানিয়েছে, যেহেতু বাইতে কুকিদের নিজস্ব সমস্যার কথা, সম্প্রদায়ের কথা প্রচারে তুলে ধরছেন তাই তারা বাইতেকে সমর্থন জানাবে।
দুই মঞ্চ সাফ জানিয়েছে, কংগ্রেস প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে তারা নানা পদক্ষেপ করবে। আউটার কেন্দ্রে নাগাল্যান্ডের এনপিএফও ভোটে লড়ছে বলেই ভোটের লড়াই শেষ পর্যন্ত নাগা বনাম কুকি লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। কুকি জঙ্গিরা জানিয়েছে, এনপিএফ জিতলে তারা নাগাদের স্বার্থে কাজ করবে। তাই এনপিএফকে জিততে দেওয়া যাবে না। জঙ্গিরা সাফ বলছে, কংগ্রেস প্রার্থী জনকল্যাণে কাজ করবে তেমন আশা তারা করছে না। কিন্তু অন্যরা জিতলে কুকিদের ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়বে। ইউপিএফ আগে ঘোষণা করেছিল, লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র কুকি জঙ্গিদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু না করলে কংগ্রেস প্রার্থীকে বয়কট করা হবে। সেই হুমকিও প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইউপিএফ। জঙ্গিরা পঞ্চায়েত প্রধানদের লিখিত ও মৌখিক ভাবে নির্দেশ দিয়েছে, গ্রামবাসীরা যেন কংগ্রেসকে ভোট দেয়।
অন্য দিকে, কংগ্রেস ও বিজেপি-র অভিয়োগ, আউটার কেন্দ্রের নাগা জেলাগুলিতে এনপিএফ প্রার্থীকে জেতাতে সরাসরি ময়দানে নেমেছে নাগা জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আইএম)। তারা বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে। উখরুল, সেনাপতি, চান্ডেল ও তামেংলং গ্রামের গ্রাম প্রধানদের পড়শি রাজ্যের নাগা জঙ্গিরা হুমকি দিচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বিষয়টি জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানিয়েছে। পাশাপাশি, সংঘর্ষ বিরতিতে থাকা সাতটি জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি চেয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি চেয়েছে রাজ্য নির্বাচন দফতর। তবে মণিপুর-ইনার আসনে মাওবাদীরা ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। অন্য দিকে, ৯ এপ্রিল, নির্বাচনের দিন মেঘালয়ে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে জঙ্গি সংগঠন এইচএনএলসি। তারা রাজ্যে ইনার লাইন পারমিট চালু করা ও রাজ্যে গণভোট নেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রার্থীদের দুর্নীতিগ্রস্ত ধনকুবের ও নির্বাচনকে সবচেয়ে বড় প্রহসন বলেছে জঙ্গিরা।