বল্লভভাই ছাড়া অসম্পূর্ণ গাঁধীও, বললেন মোদী

সর্দার বল্লভভাই পটেলকে ছাড়া মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীও অসম্পূর্ণ, পটেলের জন্মবার্ষিকীতে এ কথাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি-র পটেলের জন্মদিন মহা ধুমধাম করে পালন করার চোটে প্রায় ঢাকাই পড়ে গিয়েছে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর প্রয়াণ বার্ষিকী। বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। আজ শক্তিস্থলে ইন্দিরা গাঁধীর স্মৃতিসৌধে সশরীরে হাজির না থাকলেও নিজের বক্তৃতায় মোদী বার বার টেনে এনেছেন ইন্দিরা গাঁধীর প্রসঙ্গ। বোঝাতে চেয়েছেন, কংগ্রেস যা-ই বলুক, ইন্দিরাকে তিনি ভোলেননি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫
Share:

সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মদিনে নয়াদিল্লির পটেল চকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন নরেন্দ্র মোদীর।

সর্দার বল্লভভাই পটেলকে ছাড়া মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীও অসম্পূর্ণ, পটেলের জন্মবার্ষিকীতে এ কথাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি-র পটেলের জন্মদিন মহা ধুমধাম করে পালন করার চোটে প্রায় ঢাকাই পড়ে গিয়েছে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর প্রয়াণ বার্ষিকী।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। আজ শক্তিস্থলে ইন্দিরা গাঁধীর স্মৃতিসৌধে সশরীরে হাজির না থাকলেও নিজের বক্তৃতায় মোদী বার বার টেনে এনেছেন ইন্দিরা গাঁধীর প্রসঙ্গ। বোঝাতে চেয়েছেন, কংগ্রেস যা-ই বলুক, ইন্দিরাকে তিনি ভোলেননি।

আজ সকালে পটেল চকে বল্লভভাইয়ের ছবিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। দিনটিকে ইতিমধ্যেই ‘জাতীয় সংহতি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। আজ রাজধানীতে ‘ঐক্যের জন্য দৌড়ের’ সূচনাও করেন মোদী। ওই অনুষ্ঠানে সাদা কুর্তা-পায়জামা আর লাল শাল গায়ে প্রধানমন্ত্রীকে রাজধানীর রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণের জন্য হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। সঙ্গে ছিলেন সুষমা স্বরাজ, বেঙ্কাইয়া নায়ডু, অরুণ জেটলির মতো মন্ত্রীরা। দৌড়ে হাজির ছিলেন সুশীল কুমার, বীরেন্দ্র সহবাগ, গৌতম গম্ভীরের মতো খেলোয়াড়রাও।

Advertisement

তবে এক দিকে বিজেপি যখন দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ১৩৯তম জন্মদিন মহাসমারোহে উদ্যাপন করল, উল্টো দিকে ইন্দিরা গাঁধীর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আজ শক্তিস্থলে হাজির ছিলেন না মোদী সরকারের কোনও প্রতিনিধি। হাজির ছিলেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী এবং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। সনিয়া-রাহুল এ নিয়ে মুখ না খুললেও মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ স্বভাবতই ভাল চোখে দেখছেন না কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। কংগ্রেসের মতে, গত তিরিশ বছরে এ ভাবে কোনও সরকার ইন্দিরা গাঁধীর প্রয়াণ বার্ষিকীকে অবহেলা করেনি। বিজেপি বরাবরই অভিযোগ করে এসেছে, সর্দার পটেলকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান দেয়নি কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে মণীশ তিওয়ারি আজ বলেন, “বিজেপি বোধহয় ভুলে যাচ্ছে যে সর্দার পটেল আসলে কংগ্রেসেরই সদস্য ছিলেন।” মোদী অবশ্য আজকের দিনটা শুরুই করেছেন ইন্দিরা গাঁধীকে নিয়ে একটি টুইট করে। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, “দেশবাসীর সঙ্গে আমিও শ্রীমতী ইন্দিরা গাঁধীকে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ করছি।” আজ পটেলের জন্মবার্ষিকী পালনের সময়ও মোদী মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, “এই অনুষ্ঠানের মানে এই নয় যে বিজেপি সরকার দেশের অন্য নেতা-নেত্রীকে অসম্মান করে।”

পটেলের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মোদী বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলে ন, “পটেল ছাড়া গাঁধীজিও অসম্পূর্ণ।” তাঁর অভিযোগ, স্বাধীনতা আন্দোলনে পটেল যে ভাবে গাঁধীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন, তার যোগ্য সম্মান দিতে পারেনি কংগ্রেস। সর্দারের জন্মবার্ষিকীর সঙ্গে নাম না করেও ইন্দিরা গাঁধীর প্রয়াণ দিবসকে জুড়ে দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক যে এক জন মানুষ যিনি নিজের জীবনটাই দেশের সংহতির জন্য উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁরই জন্ম দিবসে তিরিশ বছর আগে ঘটে গিয়েছিল এমন এক ঘটনা, যা দেখে গোটা দেশ আঁতকে উঠেছিল।” তাঁর মতে, ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পরে যে শিখ-বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়েছিল, তা ভারতীয় সমাজের ঐক্যের ঐতিহ্যকে ছুরিবিদ্ধ করেছে।


ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুদিনে নয়াদিল্লির শক্তিস্থলে শ্রদ্ধার্ঘ্য রাহুল ও সনিয়া গাঁধীর। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

ইন্দিরা গাঁধীর প্রয়াণ দিবস পালন না করায় মোদীর পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেও আজ কটাক্ষ করেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। কলকাতায় আজ ইন্দিরার মূর্তি থেকে সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি পর্যন্ত মিছিল করে দু’জনকেই শ্রদ্ধা জানায় কংগ্রেস। মানসবাবু বলেন, “ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর দিন কাঁথিতে রাজীব গাঁধীর বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার সময় সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও আমার সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের তৎকালীন সম্পাদিকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সরকার আজ ইন্দিরাজির আত্মবলিদান দিবস মর্যাদা দিয়ে পালন করল না। এখানে কোথাও একটা মোদী ও মমতার সরকারের মধ্যে মিল পাচ্ছি!” রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সর্দার পটেলের মূর্তিতে মালা দিলেও ইন্দিরার মূর্তিতে মালা দিয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানসবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement