ত্রিশে যা পেরেছেন, নব্বইয়েও কি সেই আগুন জ্বালাতে পারবেন! দ্রাবিড় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে এখন কিন্তু সেই চেষ্টাতেই নেমে পড়েছেন ডিএমকে-প্রধান মুথুভেল করুণানিধি! সরকারি কাজে হিন্দি ভাষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে মোদী সরকার সম্প্রতি নির্দেশ জারি করেছে। আর আজ তার বিরুদ্ধেই জেহাদ ঘোষণা করলেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
কলাইনারের কথায়, “অ-হিন্দিভাষীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করার চক্রান্ত করছে কেন্দ্র। হিন্দির প্রসারের আগে উন্নয়নের কাজকে অগ্রাধিকার দিন প্রধানমন্ত্রী।” মোদীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এ কথাও বলেছেন, “ভাষা নিয়ে আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে যাবেন না। লড়াইয়ের সেই ময়দান এখনও তপ্ত রয়েছে।”
সরকারি কাজের সর্বস্তরে হিন্দি ভাষাকে অগ্রাধিকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়েছে নতুন সরকার। ২৭ মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও সব মন্ত্রক যেন হিন্দিকে অগ্রাধিকার দেয়।
আমলারা এমন সম্ভাবনা আগাম দেখছিলেন। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার আগে থেকেই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হচ্ছিল, বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথোপকথনেও এ বার হিন্দির ব্যবহার হবে। মোদী দোভাষী ব্যবহার করবেন। কূটনীতিতে এ ভাবে দোভাষী ব্যবহার করে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। এক কূটনীতিক বলেন, কোনও বিষয়ে নিজের মন্তব্যে ঘরোয়া রাজনীতিতে এক রকম বার্তা দিতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী, আবার বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানকে অনুবাদ করে বলার সময় শব্দের ব্যবহারে কিছুটা লঘু করে সেটা বলা যেতে পারে।
তবে কলাইনার চাইছেন, দ্রাবিড় রাজনীতিতে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করতে। ভাষা আন্দোলনে সামিল হয়েই একদা রাজনীতিতে প্রবেশ করেন করুণানিধি। তার পর সেই আন্দোলন এমন স্তরে পৌঁছয় যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে ঘোষণা করতে হয় অ-হিন্দি রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের যোগাযোগের জন্য ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হবে।
লোকসভা ভোটে এ বার তামিলনাড়ুতে একটি আসনও জিততে পারেনি ডিএমকে। বিধানসভাতেও ডিএমকে এখন প্রান্তিক শক্তি। এই অবস্থায় অতীতের সেই আগুনটাই আরও এক বার জ্বালানোর চেষ্টা করছেন নবতিপর কলাইনার। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজুজুর কথায়, “করুণানিধি একটু বাড়িয়ে বলছেন। রাষ্ট্রভাষা হিন্দিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তার মানে এই নয় যে অন্য সব আঞ্চলিক ভাষা গুরুত্ব হারাবে।”