হিন্দি বলয়ের দুই বড় রাজ্যের ক্ষমতা দখলের অঙ্ক তো রয়েইছে। কিন্তু বাংলার কুর্সি দখলই যে তাঁর পাখির চোখ, সেটা ফের স্পষ্ট করে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। জমি নিয়ে বাধা দূর না করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শিল্পে লগ্নি টানার জন্য দরবার করছেন, তখন ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এর ঠিক আগে নিজের রাজ্যে প্রবাসী ভারতীয় দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদী তাঁর আশু রাজনৈতিক লক্ষ্যের নকশাটি সুকৌশলে এঁকে দিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়দের গঙ্গা দূষণরোধ কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এমন তিনটি রাজ্যের নাম উল্লেখ করলেন, যেখানে আগামী দু’-আড়াই বছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই তিনটি রাজ্য হল, বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ।
এ বছরের শেষেই বিহারে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ। আর তার মধ্যিখানে, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। গঙ্গাকে নির্মল করার ডাক দিয়ে এ দিন প্রবাসীদের উদ্দেশে মোদী বলেন, “এর ফলে উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার পরিবেশ ও গ্রামীণ উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।” এই তিন রাজ্যেই বিজেপির সরকার নেই। আর এই তিন রাজ্যেই মোদীর উন্নয়নের কর্মসূচিকে সামনে রেখে ক্ষমতা দখল করতে চান মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ। আজ মোদীর বক্তব্যের পরে বিজেপি নেতারা মানছেন, উন্নয়নের মোড়কে এই তিন রাজ্যের নাম উল্লেখ আসলে প্রধানমন্ত্রীর সুচিন্তিত রাজনৈতিক কৌশল। বিহারে নীতীশের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার আগে যৌথ ভাবে হলেও বিজেপি সে রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। উত্তরপ্রদেশেও অতীতে সরকার গড়েছে বিজেপি। সেই অর্থে পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়াই তাদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের মতো দু’টি বড় বিষয়ে সরব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ বারে উন্নয়নের বিষয়টিও সুকৌশলে তুলে ধরতে চাইছেন মোদী-শাহ জুটি।