নীতীশকে ছেড়ে বিজেপির পথে এখন এন কে সিংহ-ও

প্রায় প্রতিটি প্রাক্-নির্বাচনী সমীক্ষাতেই বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে নীতীশ কুমারের ভাগ্যে জুটেছে গোটা পাঁচেক আসন। প্রশ্ন উঠেছে, বিহারে নীতীশের নৌকা কী ডুবছে? নীতীশকে ছেড়ে যাওয়ার বহর দেখলে ডুবন্ত নৌকার উপমাটাই যে কারও মনে আসবে। বিষয়টি আজ আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ‘এন কে’, নন্দকিশোর সিংহ। সরাসরি নীতীশকে চিঠি দিয়ে তাঁর দল ছাড়ার কথা একদা তাঁর ঘনিষ্ঠ এন কে জানিয়ে দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৪ ০৪:২২
Share:

প্রায় প্রতিটি প্রাক্-নির্বাচনী সমীক্ষাতেই বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে নীতীশ কুমারের ভাগ্যে জুটেছে গোটা পাঁচেক আসন। প্রশ্ন উঠেছে, বিহারে নীতীশের নৌকা কী ডুবছে? নীতীশকে ছেড়ে যাওয়ার বহর দেখলে ডুবন্ত নৌকার উপমাটাই যে কারও মনে আসবে। বিষয়টি আজ আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ‘এন কে’, নন্দকিশোর সিংহ। সরাসরি নীতীশকে চিঠি দিয়ে তাঁর দল ছাড়ার কথা একদা তাঁর ঘনিষ্ঠ এন কে জানিয়ে দিয়েছেন। আর সাংবাদিকদের বলেছেন, “নীতীশের এখন বিহারের উন্নয়ন নিয়ে ভাবার সময় নেই। উন্নয়ন পিছনে পড়ে গিয়েছে। নীতীশ রাজনৈতিক ভাবে বাঁচার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ডুবন্ত নৌকার কান্ডারি।” রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এন কে বিজেপিতেই যোগ দিচ্ছেন।

Advertisement

একদা দলের উপরে নীতীশের যে নিয়ন্ত্রণ ছিল তা যেন ক্রমেই কমছে। জেডিইউয়ের এক হতাশ নেতার কথায়, “বোঝাই যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণ কিছু নেই। এরা সব সুখের পায়রা ছিল। দুর্দিন আসছে মনে করে এরা সবাই দল ছেড়ে যাচ্ছে।”

গত কয়েক মাসে, মোদী-ঝড় ওঠার পর থেকেই নীতীশের নৌকা টলমল। তবে তাকে পাত্তা না দিয়ে নীতীশ নিজস্ব ঢঙেই দল চালাতে গিয়ে আরও সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। দল থেকে বহিষ্কৃত নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি অভিযোগ করেছিলেন, “নীতীশের অহং বোধ এতটাই তীব্র হয়ে উঠেছে যে কোনও রকম গঠনমূলক সমালোচনাও তিনি সহ্য করতে পারেন না। সেই সমালোচনাকেও নিজের গায়ে মেখে সমস্ত বিষয়টিকে তিনি ব্যক্তিগত শত্রুতার পর্যায়ে নিয়ে যান।” দলের একাংশ শিবানন্দের বক্তব্যের সঙ্গে একমত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমনই এক জেডিইউ নেতা উল্লেখ করলেন পুরনো কথা। তাঁর বক্তব্য, একদা এই অভিযোগ তুলেই দলের প্রথম সারির নেতা দিগ্বিজয় সিংহ দল ছেড়ে দেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা, অসুস্থ জর্জ ফার্নান্ডেজকেও কোণঠাসা করে কার্যত রাজনীতি ছাড়তেই বাধ্য করেন নীতীশ। ক্রমশ জেডিইউয়ের সমার্থক হয়ে উঠেছেন নীতীশ। এখন বিজেপি-র সঙ্গ ছেড়ে ভোটের রাজনীতিতে কোণঠাসা নীতীশ বুঝতে পারছেন, দলে তাঁর নিয়ন্ত্রণ কতটা আলগা।

Advertisement

গত কয়েক মাসে শিবানন্দ তিওয়ারি, সুশীল সিংহ-সহ পাঁচ সাংসদকে এক কথায় দল থেকে বহিষ্কার করেছেন নীতীশ। শিবানন্দ, সুশীল সিংহ কিংবা এন কে সিংহের মতো নেতাদের রাজ্যসভায় ফের পাঠাতে রাজি হননি। লোকসভা ভোটে জিতে সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দলেরই এক নেতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, “নীতীশ কিন্তু বিধানসভায় জিতে মুখ্যমন্ত্রী নন। তিনি বিধান পরিষদের সদস্য।”

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব এন কে-র সঙ্গে বিজেপি ঘরানার ঘনিষ্ঠতা আজকের নয়। চাকরি জীবনের শেষ দিকে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সচিব হিসেবেও কাজ করেন। অবসরের পরেও পিএমও-তে তাঁকে ওএসডি হিসেবে রেখে দেওয়া হয়। পরে যোজনা কমিশনের সদস্যও করা হয়। বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদা আদায় করতে পারেননি এন কে। তার ফলেই তাঁর সঙ্গে নীতীশের দূরত্ব বাড়ে বলে রাজনৈতিক সূত্রে খবর। মোদীর দলে যোগ দিয়ে তাই মধুর প্রতিশোধ নিলেন এন কে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement