ছ’টি মহানগরের জন্য বার বার এটিএম থেকে নিখরচায় টাকা তোলার উপর এ বার রাশ টানছে ভারতীয় রির্জাভ ব্যাঙ্ক (আরবিআই)। নিজের ব্যাঙ্কের এটিএমের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকেই নিজস্ব সেভিংস অ্যাকাউন্ট থাকা ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে এই সীমা বেঁধে দেওয়া হবে কমপক্ষে পাঁচে, অন্য ব্যাঙ্কের জন্য তা হবে তিন। শীর্ষ ব্যাঙ্ক বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়ে বলেছে, এর বেশি লেনদেন করলে প্রতিবার এটিএম ব্যবহারের জন্য সর্বোচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত ফি ধার্য করতে পারে ব্যাঙ্ক।
কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ এই নয়া নিয়মের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছে আরবিআই। এত দিন নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থাকলে সেই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে যত খুশি লেনদেন করা যেত নিখরচায়। অন্য ব্যাঙ্কের এটিএমে ৫টির বেশি লেনদেন করলে ফি ধার্য হত। নয়া নিয়মে এটিএম লেনদেন হিসেবে ধরা হবে টাকা তোলা ছাড়াও অন্য কাজকর্মকে। যেমন, অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে তা জানা, চেক বই নেওয়া, ক্রেডিট কার্ডের টাকা মেটানো ইত্যাদি। তবে কিছু অতি ক্ষুদ্র আমানতকারীর জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হচ্ছে না। ওই ছ’টি মেট্রো শহরের বাইরেও তা খাটবে না। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক তার নিজস্ব নীতি অনুযায়ী স্থির করবে, এটিএম ফি কী হবে এবং কতগুলি লেনদেন বিনামূল্যে করা যাবে।
এটিএম বসানো ও তা রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ক্রমবর্ধমান খরচ সামলাতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি নাজেহাল বলে জানিয়েছে আরবিআই। পাশাপাশি, নিখরচায় পাঁচ বার ব্যবহারের সুবিধা থাকায় অ্যাকাউন্ট নেই, এমন ব্যাঙ্কের এটিএম ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে বলেও জানিয়েছে তারা। সেই কারণেই তাদের এই সিদ্ধান্ত। প্রসঙ্গত, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে গড়া সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) কিছুদিন ধরেই শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে এই নিখরচায় এটিএম লেনদেন কমানোর ব্যাপারে আর্জি জানিয়ে আসছিল। তারা এ ব্যাপারে শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছে স্মারকলিপিও দেয়।
আরবিআই তার বিবৃতিতে বলেছে, নিখরচায় ব্যবহারের সীমার বাইরে লেনদেন করলে নতুন ফি কী হবে, স্পষ্ট করে তা গ্রাহকদের জানানোর ব্যাপারে তারা নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে। গ্রাহকের লেনদেনের ঠিক হিসেবও রাখতে বলা হয়েছে, যাতে তাঁদের ভোগান্তি না-হয়। পাশাপাশি, অবস্থানগত দিক থেকে এটিএমটি মেট্রো শহরে, নাকি তার বাইরে রয়েছে, সেটাও জানিয়ে দিতে হবে গ্রাহককে। তা হলে তিনি বুঝতে পারবেন, নিখরচায় কতগুলি লেনদেন করা যাবে। তা ছাড়া গ্রাহককে প্রতি মাসে সতর্ক করতে হবে, কতগুলি লেনদেন তিনি করেছেন, এবং আর কত বার এটিএম ব্যবহার করলে তাঁকে ফি দিতে হবে।