আট বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতেই খাস রাজধানী দিল্লিতে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। বিদ্যুতের ঘাটতি সামাল দিতে এখন হিমশিম খাচ্ছে মোদী সরকার।
গত কয়েক দিন ধরেই প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল দিল্লিবাসী। তাপমাত্রা উঠে গিয়েছে ৪৫ ডিগ্রির উপরে। তার উপরে দিনে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। রাজধানীর অনেক প্রান্তে বিদ্যুৎ থাকছে না রাতেও। ক’দিন আগে দিল্লিতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি গ্রিডও। যে কারণে এখনও স্বাভাবিক পরিস্থিতি বহাল হয়নি।
গত কালই দিল্লির শপিং মলগুলিতে রাত দশটার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। সরকারি দফতরগুলিতেও এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু তাতেও হাল ফেরেনি। ক্ষমতায় এলে ‘ভাল দিন’ আনার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু নয়া সরকার কাজ শুরু করার পরেই খোদ রাজধানীতে বিদ্যুৎ সঙ্কট অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে।
মোদী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে নির্দেশ দিয়েছেন। পীযূষ আজ সকাল থেকেই মন্ত্রকের অফিসারদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। আগে ২ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশ্বাস দিলেও পীযূষ এখন বুঝতে পারছেন দুই সপ্তাহের আগে কোনও ভাবেই হাল ফিরবে না।
এখন এই বিদ্যুৎ সঙ্কটের দায় শীলা দীক্ষিত সরকারের উপরে চাপানোর চেষ্টা করছেন পীযূষ। তাঁর দাবি, এ ধরনের সঙ্কট মোকাবিলা করার জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, সেটি করেনি আগের সরকার। দিল্লিতে এখন কোনও সরকার না থাকায় বিদ্যুৎমন্ত্রী আজ দেখা করেন উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গের সঙ্গেও।
সেখানেও পীযূষ জানান, নতুন সরকার সবে এসেছে। গ্রিডগুলি পুরনো হয়ে গিয়েছে। সরবরাহ লাইনগুলি ট্রিপ করে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিকাঠামোও নেই। ফলে এই সরকারকে দোষ দেওয়া যায় না।
আবার কংগ্রেসের নেতারা সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে দায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উপরেই চাপিয়ে দেন। দিল্লির প্রাক্তন মন্ত্রী হারুন ইউসুফ বলেন, “অযথা কংগ্রেসের উপরে দায় চাপিয়ে কোনও লাভ নেই। শীলা দীক্ষিতের সময় এই গরমেও দিল্লিবাসীকে কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি।”
দিল্লিতে আবার ভোট এলে ফের ক্ষমতায় ফেরার আশায় রয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবালও। একদা বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের বাড়ির সামনে আজ আম আদমি পার্টির বিধায়করাও বিক্ষোভ দেখাতে পৌঁছে যান। তাঁদের দাবি, দিল্লিতে এখন কোনও সরকার না থাকায় কেন্দ্রীয় সরকারই বকলমে দিল্লি চালায়। অথচ দিল্লিতেই এখন আম আদমির নাভিশ্বাস উঠছে।