সরকারের দু’বছরকে সামনে রেখে ‘মিশন উত্তরপ্রদেশ’ শুরু করে দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।
আগামিকালই মোদী সরকারের দু’বছর পূর্তি উৎসব। আর সেটিকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পৌঁছে যাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের সাহারাণপুরে। বছর কয়েক আগেও যে অঞ্চল শিরোনামে এসেছিল গোষ্ঠী সংঘর্ষের জন্য। বিজেপি সূত্রের মতে, সেখানে গিয়ে মোদী কোনও সাম্প্রদায়িক কথা বলবেন না বটে, কিন্তু দু’বছরের উন্নয়নের সাফল্য মেলে ধরে নির্বাচনী প্রচারটি কার্যত শুরু করে দেবেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়। পরশু থেকে মোদী সরকারের দু’বছরের সাফল্য প্রচার করতে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কেরা যে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ছেন, তার সিংহভাগ হবে উত্তরপ্রদেশেই। রাজনাথ সিংহ, সুষমা স্বরাজ, নিতিন গডকড়ী, স্মৃতি ইরানির মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আগামী ১৫ দিনে সে রাজ্যে প্রচার করবেন। সামনের মাসে এই উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদেই দু’দিন ধরে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক হবে। সেই ইলাহাবাদ যা জওহরলাল নেহরুর স্মৃতি বিজড়িত।
বিজেপি সূত্রের মতে, পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলের পর কংগ্রেস এখনও ঘর গোছাতে পারেনি। এই অবস্থায় বিজেপি এখন থেকেই দেশের সবথেকে বড় রাজ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এগিয়ে থাকতে চাইছে। এ বারের ভোটে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক যখন মায়াবতীকে এগিয়ে রাখছেন, সেই সময় আজ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টিকেই আমরা প্রধান প্রতিপক্ষ বলে মনে করছি। তার কারণ, নিচু স্তরে গিয়ে অনেক প্রভাব বিস্তার করেছে সমাজবাদী পার্টি।’’ বিজেপি সভাপতির মতে, অসম জয়ের পর দলের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন অসমের মতো এত কঠিন হবে না। কারণ, ইতিমধ্যেই ৭৩ জন সাংসদ রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। নিচু স্তর পর্যন্ত সে রাজ্যে বিজেপির জমি প্রস্তুত রয়েছে। অমিত শাহ বলেন, ‘‘দলিত ও সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য সরকার ও দল নিরন্তর কাজ করে চলেছে। তার সুফলও পাওয়া যাবে উত্তরপ্রদেশে।’’
তবে এখনই দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, অসমের মতো উত্তরপ্রদেশেও কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে লড়া হবে কি না। দলের ওবিসি মুখ কেশব প্রসাদ মৌর্যকে ইতিমধ্যেই রাজ্যে দলের সভাপতি করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে এক এক প্রান্তে এক এক ধরনের বৈশিষ্ট্যের জন্য কোনও এক জনকে মুখ্যমন্ত্রী করে এগোনো সঠিক কৌশল হবে কি না, সেটিও ভেবে দেখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। অমিত শাহের মতে, ‘‘সব রাজ্যের কৌশল ভিন্ন নয়। অসমে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে সাফল্য এসেছে। অনেক রাজ্যে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে না ধরেও বিজেপি সফল হয়েছে।’’
তবে কংগ্রেস যদি প্রিয়ঙ্কার মতো কোনও মুখকে সামনে এনে বাজি মারতে চায়? অমিত শাহের জবাব, ‘‘আগে তো হোক। কংগ্রেস এখন তো হারই হজম করতে পারেনি। আমরা যখন কংগ্রেস-মুক্ত ভারত গড়ার কথা বলি, সেই সময় বিভিন্ন রাজ্য থেকে কংগ্রেস বাদ যাক, সেটি তো চাই। তা ছাড়াও আমরা আসলে কংগ্রেসের সময়কার অব্যবস্থা, দুর্নীতি থেকেও মুক্ত হওয়ার কথা বলি। নরেন্দ্র মোদী সরকার গত দু’বছরে এই অব্যবস্থা থেকেই দেশবাসীকে মুক্তি দেওয়ার পথে হাঁটছে।’’