জমি না-দিলে আসবে না লগ্নি, মমতাকে জেটলি

জমি অধ্যাদেশের বিরোধিতা করায় আজ পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর কথায় মমতা যতই লগ্নি টানার জন্য ঘটা করে সম্মেলন করুন, জমি না-দিলে পশ্চিমবঙ্গে কোনও শিল্পই আসবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৮
Share:

জমি অধ্যাদেশের বিরোধিতা করায় আজ পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর কথায় মমতা যতই লগ্নি টানার জন্য ঘটা করে সম্মেলন করুন, জমি না-দিলে পশ্চিমবঙ্গে কোনও শিল্পই আসবে না।

Advertisement

কৃষকদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা অটুট রেখে পাঁচটি বিশেষ ক্ষেত্রে মালিকের সম্মতি ছাড়াই জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে সোমবার একটি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) জারি করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তার পরেই খড়্গপুরে দলের কর্মী সম্মেলন থেকে তার বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলার জমি ‘দখল করতে’ দেবেন না তিনি। তারই পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে আজ জেটলি মমতাকে কটাক্ষ করে বলেন, “জমি দেওয়া না-দেওয়াটা রাজ্যের মর্জি। পশ্চিমবঙ্গে শিল্প টানার জন্য মমতা সামনের সপ্তাহে শিল্পপতিদের সম্মেলন করছেন। কিন্তু জমি না দিলে শিল্পটা হবে কোথায়?”

ঘটনাচক্রে অর্ডিন্যান্স নিয়ে মমতার বিরোধিতাকে সমালোচনা করলেও তাঁর ডাকা শিল্পপতি সম্মেলনে নিজেই যাচ্ছেন জেটলি। ৭ তারিখের এই সম্মেলনে যোগ দিতে এক দিন আগেই কলকাতায় পৌঁছবেন তিনি। কলকাতায় যাচ্ছেন কেন্দ্রের আর এক মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীও। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুই মন্ত্রীকে কলকাতায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

Advertisement

মোদী চান, রাজনীতির ময়দানে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যতই সংঘাত থাকুক, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে কাজের সম্পর্ক বজায় থাকুক। মমতা কেন্দ্রের পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেও, রাজ্যের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াটা কেন্দ্রের কর্তব্য।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধর্ম মেনে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলেও রাজনৈতিক জমি এক চিলতেও ছাড়তে চায় না বিজেপি। অধ্যাদেশ ঘোষণার দিনই জেটলি বলেছিলেন, “গ্রাম ও শহরের উন্নয়নের জন্য জমি দরকার। মাঝ আকাশে কিছু গড়া যায় না! এর পরে যারা এর বিরোধিতা করবে, লোকসান সেই রাজ্যেরই। মানুষ বুঝবে, কারা উন্নয়নের বিরোধিতা করছেন।” বিজেপি সূত্রের মতে, মমতা যদি জমি না দিয়ে উন্নয়নের গতিকে শ্লথ করে দেন, তা হলে অমিত শাহের নেতৃত্বে বিজেপি যে তা নিয়ে রাজনৈতিক প্রচার করবে, জেটলি আজ সেই ইঙ্গিতটি দিয়ে রাখলেন।

জম্মু-কাশ্মীর ও ঝাড়খণ্ডে ভোটের পর বিজেপির লক্ষ্য আগামী দু’বছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা এমন ছ’টি রাজ্য। এর মধ্যে বিহার ও দিল্লির ভোট এ বছর। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল ও অসমে ২০১৬ সালে। অমিত শাহ আজ জানান, এ মাস থেকেই তিনি ভোটমুখী রাজ্যগুলি সফর শুরু করছেন। খাগড়াগড়ের জেলা বর্ধমানে সভা করবেন তিনি। বিজেপির এক নেতার কথায়, সারদার জাল ক্রমশ গুটোচ্ছে। খাগড়াগড়ের ঘটনাতেও কোণঠাসা মমতা। সেই সঙ্গে কী ভাবে নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন-বিরোধী অবস্থান নিয়ে রাজ্যের লোকসান করছেন মুখ্যমন্ত্রী, সেটিও প্রচারে সামিল করা হবে। বিজেপি নেতার ব্যাখ্যা, দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য নরেন্দ্র মোদী যে সংস্কারের পথে হাঁটছেন, তার বিরোধিতা করলে পশ্চিমবঙ্গেরই ক্ষতি। পরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিই কেন একমাত্র বিকল্প, প্রচারে সেটিও তুলে ধরা হবে রাজ্যবাসীর কাছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement