ছ’বছর আগে আচমকা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। নিখোঁজ ডায়েরি করলেও ছেলের হদিস পাননি পরিজনরা। তাঁর বেঁচে থাকার আশাও হারিয়েছিলেন।
তখনই খবর মিলল পাকিস্তানের লাহৌরের জেলে বন্দি রয়েছেন জামতারার গোপালপুরের মরান্ডি পরিবারের মেজো ছেলে মঙ্গল। খুশিতে ভাসল গোটা পরিবার। হারিয়ে যাওয়া ছেলের খোঁজ পেয়ে আনন্দের কান্নায় ভেঙে পড়লেন মঙ্গলের বাবা সদন। আজ তিনি বলেন, “ওর বেঁচে থাকার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। এখন জানলাম, ছেলে পাকিস্তানের জেলে বন্দি। চাষ করে সংসার চালাই। কী ভাবে ওকে ফিরে পাব জানি না।” মঙ্গলের আত্মীয়-বন্ধুরা জানিয়েছেন, তাঁর একটি পুরনো ছবি পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে তাঁকে ফিরিয়ে আনার আশ্বাসও মিলেছে।
জেলার ডেপুটি কমিশনার চন্দ্রশেখর জানান, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর দিন দশেক আগে বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানায়। এখন স্বরাষ্ট্র দফতরের মাধ্যমেই জামতারা পুলিশ দিল্লির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। কী ভাবে ওই যুবক পাকিস্তানে পৌঁছলেন, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।
রাজ্যের শাসক জোটের সঙ্গী ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা জামতারার দলীয় নেতা দেবাশিস মিশ্র বলেন, “ছ’মাস আগে পাকিস্তানের তরফে প্রথম বার মঙ্গলের সম্পর্কে কিছু তথ্য দিল্লিকে দেওয়া হয়েছিল। তবে তখন তাঁর পদবি মরান্ডির বদলে সিংহ জানানো হয়। জেলার নাম ছিল দুমকা। পরে সঠিক নাম-ঠিকানা পাঠানো হয়।”
ঝাড়খণ্ড থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরের পাকিস্তান সীমান্তে কী ভাবে পৌঁছলেন মঙ্গল, তার উত্তর খুঁজছেন মরান্ডি পরিবার। তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কাঁটাতার পেরিয়ে কী ভাবে সেই রাষ্ট্রে ঢুকে গেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক।
কয়েক জন গ্রামবাসীর বক্তব্য, প্রতি বছর ধান রোপনের পর থেকে ফসল ঘরে তোলার সময় পর্যন্ত সাঁওতাল পরগনার অনেকে ভিন্ রাজ্যে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে যান। কেউ কেউ যান পঞ্জাবে। তাঁদেরই কারও সঙ্গে হয়তো সে রাজ্যে চলে গিয়েছিলেন মঙ্গল। সেখান থেকে কোনও ভাবে সীমান্ত টপকে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েন।