জেএমএম ঘাঁটিতে হেমন্তদের হটানোর ডাক প্রধানমন্ত্রীর

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ‘দুর্গে’ ঢুকে শিবু সোরেন, হেমন্তদের দিকে তোপ দাগলেন নরেন্দ্র মোদী! আদিবাসী অধ্যুষিত সাঁওতাল পরগনায় আজ পরপর দু’টি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, “এখানে এক বাবা (পড়ুন শিবু সোরেন) তাঁর ছেলেকে (মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত) ছাড়া কাউকে এগোতে দেবেন না। ওঁরা আপনাদের সব কেড়ে নিয়েছেন। এ বার দু’জনকে সাজা দিন।” গত কাল রাজমহলে বিজেপির প্রচারসভায় একই সুরে সোরেন পরিবারকে আক্রমণ করেছিলেন দলের সভাপতি অমিত শাহ। কারও নাম না করে তিনি বলেছিলেন, “বাবা কয়লা চুরি করেছেন। এখন ছেলে সরাচ্ছেন নদীর বালি।”

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

বরহেট শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৪
Share:

প্রতি-নমস্কার। স্থানীয় বিজেপি নেত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সোমবার দুমকার নির্বাচনী জনসভায়। ছবি: পার্থ চক্রবর্তী

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ‘দুর্গে’ ঢুকে শিবু সোরেন, হেমন্তদের দিকে তোপ দাগলেন নরেন্দ্র মোদী!

Advertisement

আদিবাসী অধ্যুষিত সাঁওতাল পরগনায় আজ পরপর দু’টি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বললেন, “এখানে এক বাবা (পড়ুন শিবু সোরেন) তাঁর ছেলেকে (মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত) ছাড়া কাউকে এগোতে দেবেন না। ওঁরা আপনাদের সব কেড়ে নিয়েছেন। এ বার দু’জনকে সাজা দিন।” গত কাল রাজমহলে বিজেপির প্রচারসভায় একই সুরে সোরেন পরিবারকে আক্রমণ করেছিলেন দলের সভাপতি অমিত শাহ। কারও নাম না করে তিনি বলেছিলেন, “বাবা কয়লা চুরি করেছেন। এখন ছেলে সরাচ্ছেন নদীর বালি।”

এ দিন দুমকায় সমাবেশের পর হেলিকপ্টারে দুপুর ১টা নাগাদ বরহেট পৌঁছন মোদী। সকালে থেকেই সেখানকার বরহড়ওয়া এলাকার পটনা ময়দানে ভিড় জমতে শুরু করেছিল। দলে দলে মানুষ আসে রাজমহল, বোরিও, লিট্টিপাড়া, পাকুড়, মহেশপুর, মহাগামা থেকে। জেএমএমের ‘শক্ত ঘাঁটি’তে দাঁড়িয়ে মোদী নিশানা করেন শিবু-হেমন্তদের। তিনি বলেন, “এত বছর ধরে কেউ কেউ আদিবাসী সেজে সবাইকে ভুল বুঝিয়েছে। আপনারা সোনা, রুপো, বাংলো, গাড়ি কিছু চাননি। শুধু ছোট্ট একটা আশ্রয়, পানীয় জল, বাচ্চাদের জন্য শিক্ষা, বয়স্কদের ওষুধ চেয়েছিলেন। কিন্তু সব কিছুই ওঁরা কেড়ে নিয়েছেন।” তাই পরিবারতন্ত্রকে সমূলে উপ্ড়ে ফেলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বছরের পর বছর ধরে ওঁদের ক্ষমা করে গিয়েছেন। এ বার সাজা দেওয়ার সময় এসেছে। ঘরের ছেলেমেয়ে ভুল করলেও তো শাস্তি দিতে হয়।”

Advertisement

অনুচ্চ টিলায় ঘেরা ওই ময়দানে হাজির ৭৫-৮০ হাজার (রাজ্য পুলিশের হিসেবে) মোদী-ভক্ত তখন হাততালিতে ফেটে পড়েছেন। তারই মধ্যে মোদী বললেন, “আপনারা আমার মতো এক জন চা বিক্রেতাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়েছেন। তা হলে এক জন আদিবাসী কেন এই জায়গায় পৌঁছতে পারবেন না? আমি তো সেটাই দেখতে চাই।” আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে তিনি সবার সামনে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। জেএমএম ছাড়া অন্য বিরোধীদেরও তিনি কটাক্ষ করেন। কাঠগড়ায় তোলেন কংগ্রেসকে। মোদী বলেন, “বিরোধীরা সব সময় আমার দোষ খোঁজার চেষ্টা করেন। রটনা ছড়াতে চান। কিন্তু মোদী সহজে ভুল করে না।”

রাজমহল, দুমকার মতো সাঁওতাল পরগনার ১৮টি আসনে ২০ ডিসেম্বর পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ। এখন ওই সব জায়গার বেশিরভাগই জেএমএমের দখলে। মাত্র দু’জন বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। বাকি আসনগুলির উপর এ বার নজর পড়েছে মোদী-অমিত শাহদের। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় এ দিনের ভিড় দেখে খুশি রাজ্যের নেতারাও। বাংলাভাষী অনেকেই এসেছিলেন মোদীর কথা শুনতে। পটনা ময়দানে জায়গা না পেয়ে টিলায় উঠে দাঁড়িয়েছিলেন মোদী অনুগামীরা। তা দেখে প্রধানমন্ত্রী বললেন, “এ রকম দোতলা সমাবেশে আগে কখনও বক্তৃতা করিনি। বুঝতেই পারছি, হাওয়ার মুখ এ বার বদলাচ্ছে ঝাড়খণ্ডেও।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement