নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই সরকার বিরোধিতার প্রশ্নে সুর নরম করল তৃণমূল কংগ্রেস।
দিনভর বিতর্কের শেষে রাজ্যসভায় আজ খনি উন্নয়ন আইন সংশোধনী বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই বিলকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস ও সিপিএম বিপক্ষে সুর চড়ালেও সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে মমতার দল। এত দিন সরকার বিরোধী অক্ষের প্রতিনিধিত্ব করে এসে আজ বিরোধী শিবিরের আক্রমণে তৃণমূল ছিল অনুপস্থিত। এ নিয়ে তৃণমূলের বক্তব্য, এখন থেকে গঠনমূলক বিরোধিতার পথে হাঁটবে দল। রাজ্যের স্বার্থে বিষয়ভিত্তিক সমর্থন করা হবে সরকারকে। তবে জমি বা বিমা বিলের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলির ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিরোধিতার রাস্তা খোলা রাখা হবে। এর মধ্যেই দুপুরে ১৮৩ সাউথ অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে মমতার সঙ্গে দেখা করতে আসেন কয়লামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কয়লা বিল নিয়ে তৃণমূলের সমর্থন চান তিনি। পাশাপাশি, কলকাতায় কোল ইন্ডিয়ার অনুষ্ঠানে মমতাকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, খনি বিল নিয়ে দলের সাংসদদের মমতা জানিয়েছেন, বিষয়টির সঙ্গে রাজ্যের আর্থিক স্বার্থ জড়িত। সাত থেকে দশ দিনে বিলটি যাতে সিলেক্ট কমিটি ঘুরে ফের রাজ্যসভায় আসে সে জন্যও দলীয় সাংসদদের সরব হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি, “বিলটি পাশ হলে রাজ্যের ঘরে রাজস্ব আসবে। কিছু বিষয়ে দলের পরামর্শ কেন্দ্র মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে জমি ও বিমা বিলে দল বিরোধী অবস্থান থেকে সরছে না।”
রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে আজও অস্বস্তিতে পড়তে হয় মোদী সরকারকে। গত অধিবেশনে এই বিলটি পাশ না হওয়ায় অর্ডিন্যান্স আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই অর্ডিন্যান্সের সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা। তাই ২০ মার্চ, চলতি অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার আগেই বিলটি পাশ করানোর রণকৌশল নিয়েছিল কেন্দ্র। লোকসভায় পাশ করানোর পরেই তড়িঘড়ি আজ আলোচনার জন্য রাজ্যসভায় বিল নিয়ে আসে সরকার। কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএম প্রথম থেকেই বিলটি সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর জন্য অনড় অবস্থান নেয়। দিনভর আইনি বাদানুবাদের পর শেষে বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামিকাল এ বিষয়ে সবদর্লীয় বৈঠক বসছে সরকার। তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, “সিলেক্ট কমিটিতে কারা থাকবে, কত দিনে রিপোর্ট পেশ হবে, বৈঠকে তা ঠিক করা হবে।” তবে বিজেপি সূত্রের খবর, ফের এক বার নানা দলকে বুঝিয়ে বিলটি বর্তমান চেহারাতেই চেষ্টা করবে সরকার।