বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের মণ্ডল রাজনীতির মোকাবিলা করতে আডবাণীরা কমণ্ডল রাজনীতির জন্ম দিয়েছিলেন প্রায় আড়াই দশক আগে। এ বার বিহারে কমণ্ডল রাজনীতির ঢেউ সামলাতে ফের মণ্ডল রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন যাদব-নেতা লালুপ্রসাদ।
গত দু’দিন ধরে আরজেডি-র চিন্তন বৈঠকের পর আজ লালুপ্রসাদ সাবেক মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট রূপায়ণ করে অনগ্রসর জনজাতিগুলির (ওবিসি) জন্য একেবারে ৬০ শতাংশ সংরক্ষণের দাবি তুললেন।
দলীয় কর্মীদের সভায় লালু বুঝিয়ে দেন, ২০১৫ সালে বিহার বিধানসভার ভোটে এই ‘মণ্ডল’ তাসটিকেই নতুন করে খেলতে চান তিনি।
পাশাপাশি, বিজেপিকে ঠেকাতে সঙ্গে বোমা-দেশলাই রাখার পরামর্শ দিলেন কর্মীদের। তাঁর উপদেশ, বিপদ বুঝলেই সলতেয় আগুন দিন। লালুর এই কথায় বিজেপি পাল্টা প্রচারে নামছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডের বক্তব্য, “লালুপ্রসাদের এই বক্তব্য তো ফের জঙ্গলরাজকে ফিরিয়ে আনার ডাক। ছাত্র-যুবদের হাতে খাতা-পেন-বই থাকে। তা ছেড়ে লালু বোমা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন! আসলে উনি অন্য ভাবে হলেও হিংসাকেই উৎসাহ দিতে চাইছেন।”
প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যের দশটি বিধানসভা আসনের আগামী উপনির্বাচনে নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের সঙ্গে জোটের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে আরজেডির এই চিন্তন শিবিরে।
লালু কর্মীদের জানান, আরজেডি-জেডিইউ জোটকে বাস্তবায়িত করতে দুই দল এক সঙ্গে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতার কথায়, “এত দিন নীতীশ কুমারের সঙ্গে আমাদের শত্রুতার সম্পর্কই ছিল। কিন্তু এখন বিজেপি-র বিরুদ্ধে আরজেডি-জেডিইউ জোট করতে গেলে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের আগাম মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেই কারণেই লালুজি বিষয়টি সম্পর্কে কর্মীদের প্রয়োজনীয় ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন।” লালু কর্মীদের বলেন, “লোকসভা নির্বাচনে আমরা এক জোট হলে বিহারে নরেন্দ্র মোদীকে সহজেই ঠেকিয়ে দিতে পারতাম।”
গত কাল রাতে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা জিতনরাম মাঁঝিও একই ভাবে মিলিত ভোটের কথা বলেন। তিনি বলেন, “জেডইউ এবং আরজেডি একসঙ্গে থাকলে বিজেপি-র থেকে অনেক বেশি মানুষের সমর্থন পাবে। সামাজিক ন্যায়ের পথও সুদৃঢ় হবে।”
বিজেপি নেতা সুশীল মোদী অবশ্য এই সম্ভাব্য জোট নিয়ে ভাবিত নন। তিনি বলেন, “এটা আমাদের কাছে কোনও চ্যালেঞ্জ নয়। লালুপ্রসাদ ফের রাজ্যে জঙ্গলরাজ কায়েম করতে চাইছেন। সেই জঙ্গলরাজকে শেষ করার জন্য নীতীশ কুমারকে মানুষ সমর্থন দিয়েছিল। এখন সেই নীতীশই লালুপ্রসাদের হাত ধরে মানুষের বিরুদ্ধে যেতে চাইছেন।” তাঁর কথায়, “আমরা এই বিষয়টি নিয়েই মানুষের কাছে যাব।”