ঘরের কোন্দলের পরে এ বার শরিক বিভ্রাট নিয়ে অস্বস্তিতে বিজেপি। হরিয়ানায় কুলদীপ বিশনোই এনডিএ ছাড়ার পরেই বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ খুলেছে অন্য শরিকরা।
কাল ছেলে বিতর্কে জড়ানোর পরে দলের বিরুদ্ধে ফোঁস করেছিলেন রাজনাথ সিংহ। আজ এনডিএ জোট ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেসের কুলদীপ বিশনোই। নরেন্দ্র মোদীর দলকে দুষে বললেন, “শরিকদের পিঠে ছোরা মারার ইতিহাস রয়েছে বিজেপির।” বিজেপি সূত্রের খবর, হরিয়ানায় এখনও মোদী-হাওয়া রয়েছে। সেই হাওয়ায় ভর করেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে জিততে চায় দল। তাই কুলদীপকে মোট আসনের অর্ধেক দেওয়া বা তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা দলের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে, কুলদীপকে কার্যত জোর করে এনডিএ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
আর এই ঘটনাতেই ভয় পেয়েছে এনডিএ-র অন্য শরিকরা। লোকসভা ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় বিজেপি ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গেও এই ধরনের আচরণ করতে পারে বলে শরিক শিবিরে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই ‘দাদাগিরি’ রুখতেই সরব হয়েছে তারা।
মহারাষ্ট্রেও বিধানসভা নির্বাচন আসছে। আসন সমঝোতা এখনও চূড়ান্ত নয়। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাকে তুলে ধরা হবে, তা নিয়েও জট কাটেনি। গোপীনাথ মুন্ডের অকাল প্রয়াণের পর বিজেপি তাদের অন্য কোনও নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চায়। আর শিবসেনা চায় উদ্ধব ঠাকরেকে। কিন্তু প্রয়োজনে উদ্ধবকেও ব্রাত্য করে দেবে না তো বিজেপি? এই আশঙ্কা দেখা দেওয়ার পরেই দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-য় বিজেপিকে সতর্ক করেছে শিবসেনা।
‘সামনা’-য় আজ বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের ফল দেখে বিজেপির শিক্ষা নেওয়া উচিত। লোকসভা ও বিধানসভা এক নয়। উদ্ধবের দূত হয়ে দিল্লিতে এসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেছেন মহারাষ্ট্রে এনডিএ-র অন্য শরিক নেতা রামদাস আটওয়ালে। মহারাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকা রাজীবপ্রতাপ রুডি অবশ্য শিবসেনাকে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁর কথায়, “বিশনোইয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তা শিবসেনার মতো পুরনো শরিকের সঙ্গে হওয়ার কথা নয়। আমরা একসঙ্গেই ভোটে লড়ব।”
সরকারের ১০০ দিন পার হতে না হতেই যে ভাবে ঘরোয়া কোন্দল ও শরিকদের সঙ্গে সংঘাত প্রকাশ্যে চলে আসছে তাতে কি মোদীর ভাবমূর্তিতে আঁচ পড়বে না?
এই প্রশ্নটি সরকার তথা বিজেপির অন্দরেও রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই আজ দলের চার মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠক করে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কুলদীপ নিজের পায়ে কুড়ুল মেরেছেন। লোকসভা ভোটে নিজের ভাগে থাকা দু’টি আসনে জিততে পারেননি। উপরন্তু কার্যত আসন ‘বিক্রি’ করেছেন। বিজেপির অভিযোগ, হরিয়ানায় কুলদীপ কংগ্রেসের ‘বি টিম’ হয়ে কাজ করছিলেন। তাদের মতে, হরিয়ানার মানুষ বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী চান, ‘সেনাবিহীন’ সেনাপতি কুলদীপকে নয়। কিন্তু আপাতত ওই রাজ্যে তেমন সেনাপতি নেই বিজেপির। দলের এক নেতার বক্তব্য, “হরিয়ানায় মোদীই আমাদের সেনাপতি।”