গাড়ি চাপা: শ্রীনগরের নৌহাট্টা চকে শুক্রবার পিষে যাওয়ার পরে কাইজার শেখ। —নিজস্ব চিত্র।
গত কাল শ্রীনগরে সিআরপিএফের গাড়িতে পিষে আহত এক যুবকের মৃত্যু হল আজ। তার শেষকৃত্য ঘিরে ফের সংঘর্ষে জড়াল বাহিনী ও জনতা। সেইসঙ্গে সিআরপিএফকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালাল জঙ্গিরা।
গত কাল নৌহাট্টা চকে সিআরপিএফের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে এক দল বিক্ষোভকারী। কয়েক জন গাড়িটিতে উঠেও পড়ে। তার পরেই গাড়িটি তাদের পিষে দেয়। আহত হয় তিন যুবক। তাদের মধ্যে নামচাবাল ফতেহ কাদাল এলাকার বাসিন্দা বছর একুশের কাইজার শেখের অবস্থাই ছিল সব চেয়ে গুরুতর। আজ শ্রীনগরের হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
কাইজারের বাবা-মা মারা গিয়েছেন। ফতেহ কাদাল এলাকায় পিসির বাড়িতে দুই বোনের সঙ্গে থাকত সে। তার মৃত্যুর জেরে উপত্যকায় হরতালের ডাক দেয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। শেষকৃত্য ঘিরে গোলমালের আশঙ্কায় শ্রীনগরের সাতটি থানা এলাকায় জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসনও। আজ ফতেহ কাদালে কাইজারের শেষকৃত্য ঘিরে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। নিষেধাজ্ঞা থাকায় মিছিলকে বাধা দেয় বাহিনী। ফলে জওয়ানদের লক্ষ্য করে পাথর ছো়ড়া শুরু হয়। বাহিনীর পাথর ও ছররার আঘাতে আহত হয় তিন বিক্ষোভকারী।
পরে কাইজারের দেহ শ্রীনগরের ইদগাহে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শেষকৃত্যের পরে ফের বাহিনী-জনতা সংঘর্ষ হয়। রাতে ফতেহ কাদালে সিআরপিএফের উপরে গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর রামবচন যাদব-সহ তিন জন জওয়ান আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক মহিলা-সহ তিন পথচারীও। লালচকে বুদশাহ সেতুর কাছে অন্য একটি গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছেন এক জওয়ান ও এক পথচারী।
সিআরপিএফের তরফে জানানো হয়েছে, গত কাল নৌহাট্টা চকে যে গাড়িটি হামলার মুখে পড়েছিল তাতে ছিলেন বাহিনীর ২৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের দ্বিতীয় শীর্ষ কর্তা এস এস যাদব। বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে উঠে পড়ে আরোহীদের পিটিয়ে মারার চেষ্টা করছিল। তাই গাড়িচালক দ্রুত ওই এলাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাতেই তিন যুবক পিষে গিয়েছে। ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করেছে পুলিশ। সিআরপিএফের চালকের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিরোধী নেতা ওমর আবদুল্লার কটাক্ষ, ‘‘আগে জিপের সামনে বেঁধে যুবককে ঘোরানো হয়েছিল। এখন বিক্ষোভকারীদের উপর দিয়ে জিপ চালানো হচ্ছে। বন্দুকের বদলে কি জিপ ব্যবহার করা হচ্ছে?’’