বাড়িতে বসেই মিলবে মনপসন্দ স্ট্রিট ফুড।
করোনা পরিস্থিতি অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। আরও অনেক কিছুই বদলে দেবে। কারণ, অকারণে বাড়ির বাইরে যাওয়াতেই এখন নিষেধাজ্ঞা। এর ফলে স্ট্রিট ফুড দূরের কথা রেস্তোরাঁয় যাওয়াও তে প্রায় বন্ধ। আনলক পর্ব চললেও এখনও অনেক মানুষই কোনও ঝুঁকি নিচ্ছেন না। সরকার বা প্রশাসনের পক্ষেও সেটাই বলা হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে খুবই সমস্যায় ছোট ব্যবসায়ীরা। তাদের পাশে দাঁড়াতে এবার এক বড় পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। আর তাতে এবার বাড়িতে বসেই মনপসন্দ স্ট্রিট ফুড অর্ডার করা যাবে। এবার সুইগি অ্যাপের মাধ্যমে চাইলেই বাড়িতে চলে আসবে তেলেভাজা থেকে পাও ভাজি, ইডলি, চাউমিন, ঘুগনি সব।
এখন সুইগির মাধ্যমে রেস্তোরাঁর খাবার অনলাইনে অর্ডার করাই যায়। বাড়িতে বসেই মিলে যায়। সেই সুবিধা মিলবে স্ট্রিট ফুডের ক্ষেত্রেও। গত সোমবারই সুইগির সঙ্গে এই ব্যাপারে চুক্তি সাক্ষর করেছে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। চুক্তিতে মন্ত্রকের পক্ষে যুগ্ম সচিব সঞ্জয় কুমার এবং সুইগির পক্ষে চিফ ফিনানসিয়াল অফিসার রাহুল বোথরা সই করেছেন। প্রথম দফায় এই পরিষেবা শুরু হচ্ছে আমদাবাদ, চেন্নাই, দিল্লি, বারাণসী ও ইন্দৌর শহরে। ইতিমধ্যেই ২৫০ জন রাস্তার পাশে ব্যবসা করা হকার এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
আত্মনির্ভর ভারত গঠনের স্লোগান তোলার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনাকালে সমস্যায় পড়া স্ট্রিট ভেন্ডরদের আর্থিক সাহায্যের জন্য অল্প সুদে ১০ হাজার টাকা করে ঋণের ঘোষণা করেন। সেই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী স্ট্রিট ভেন্ডরস আত্মনির্ভর নিধি। গত পয়লা জুন এই প্রকল্প চালু হয়েছে। নিয়মে বলা হয়েছে, স্ট্রিট ভেন্ডরদের ঋণ নেওয়া টাকা এক বছরের মধ্যে মাসিক কিস্তিতে শোধ করতে হবে। দেশের মোট ৫০ লাখ স্ট্রিট ভেন্ডরকে এই ঋণ দেওয়াই লক্ষ্য এই প্রকল্পে। কেউ সময়ের আগেই ঋণ শোধ করে দিলে বাড়তি সুযোগও পাবেন। কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুয়াযী, গত রবিবার পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২০ লাখ ঋণের আবেদন জমা পড়েছে। ৭.৫ লাখ আবেদন মঞ্জুর হয়েছে এবং ২.৪ লাখ আবেদনকারীকে ঋণের টাকা ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সেই প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবেই স্ট্রিট ফুড হোম ডেলিভারির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এটা ঠিক যে, কোভিড অতিমারির জন্য রাস্তার পাশে দোকান পেতে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এবং হচ্ছে। দীর্ঘ সময় তাঁরা দোকান পাততেই পারেননি। এখন একটু একটু করে খুললেও স্কুল, কলেজ, অফিস, কাছারি সেভাবে চালু হয়নি। ফলে ক্রেতাও খুবই কম। এখন অনলাইন পরিষেবা চালু হলে সেই বিক্রেতারা একটু হলেও সুদিন দেখতে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অনেকটাই সুবিধে হবে ক্রেতাদেরও। বাড়ি থেকে বার হওয়া, সামাজিক দূরত্ব রেখে লাইন দেওয়ার ঝক্কি ছাড়াই তুলনামূলক কম দামের সুস্বাদু স্ট্রিট ফুড মিলবে বাড়িতে বসেই।
আরও পড়ুন: ১০ বছরে ১০ সন্তানের মা, তাও থামতে চান না
আরও পড়ুন: ‘চা ওয়ালা’ আরশাদ খানকে মনে আছে? দেখুন কী করছেন তিনি
স্ট্রিট ভেন্ডরদের অনলাইনে বিক্রি করার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে। কারণ, এর আগে তাঁরা এই ভাবে খাবার বিক্রি করতে অভ্যস্ত ছিলেন না। কী ভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে খাবার তৈরি করতে হয়, কেমন করে দাম নির্ধারণ করতে হয় এবং কোন পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার প্যাক করতে হয় সেই বিষয়ে বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও জানা গিয়েছে। ভেন্ডরদের কেন্দ্রীয় খাদ্য নিয়ামক সংস্থা এফএসএসএআইয়ের অধীনেও আনা হবে।