বিবেককে খুন করল পুলিশ? তীব্র প্রশ্নের মুখে আদিত্যনাথ

রবিবার ভৈসাকুণ্ডে বিবেকের শেষকৃত্য হয়। সেখানে ছিলেন  তাঁর আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধু ও সহকর্মীরা। ছিলেন যোগী সরকারের কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪৮
Share:

বিবেক তিওয়ারির মৃত্যু নিয়ে যোগী আদিত্যনাথকে বিঁধছেন বিরোধীরা। —ফাইল চিত্র।

অ্যাপল কর্মী বিবেক তিওয়ারির মৃত্যুর পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও ছোট মেয়ে শানু জানে না, বাবা আর ফিরবে না!

Advertisement

রবিবার ভৈসাকুণ্ডে বিবেকের শেষকৃত্য হয়। সেখানে ছিলেন তাঁর আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধু ও সহকর্মীরা। ছিলেন যোগী সরকারের কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীও। বিবেকের এমন পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের কেউই। তাঁদের মনে একটাই প্রশ্ন— বিবেককে গুলি করে মারার জন্য অভিযুক্ত ওই পুলিশ কনস্টেবলকে কে লাইসেন্স দিল?

শুক্রবার গভীর রাতে এক মহিলা সহকর্মীকে নিয়ে বিবেক যখন ফিরছিলেন, তখন গোমতীনগর এক্সটেনশন এলাকায় রুটিন তল্লাশি চালাচ্ছিলেন কনস্টেবল প্রশান্ত চৌধুরি ও তাঁর এক সহকর্মী। প্রশান্তের দাবি, সেখানে আলো নিভিয়ে দাঁড়িয়েছিল গাড়িটি। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাঁরা গাড়ির কাছে যান। তখনই গাড়ি স্টার্ট করেন বিবেক। মোটরবাইক গাড়ির সামনে রেখে আটকানোর চেষ্টা করেন প্রশান্ত। কিন্তু গাড়িটি না থেমে ধাক্কা মারে বাইকে। অভিযুক্ত ওই কনস্টেবলের দাবি, তিনি পড়ে যান। এর পরে বিবেক তাঁর উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করলে আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালান তিনি। ঘটনার পরেই গ্রেফতার হন প্রশান্ত ও তাঁর সহকর্মী। চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়েছে তাঁদের।

Advertisement

এই ঘটনার পরেই যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। তাদের দাবি, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ অপরাধীদের দমন করার নামে ইচ্ছেমতো গুলি চালাচ্ছে। যোগী আদিত্যনাথ ক্ষমতায় এসে বলেছিলেন, ‘কেউ অপরাধ করলেই উড়িয়ে দেব (ঠোক দেঙ্গে)’। সেই পথেই হাঁটছে রাজ্যের পুলিশ। কালকের ঘটনা সম্বন্ধে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, এটা দু’জন পুলিশকর্মীর ভুল সিদ্ধান্ত। পুলিশি সংঘর্ষের ঘটনা নয়। আজ মধ্যপ্রদেশের শাহদলে ভোট প্রচারে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের থেকে আর কী-ই বা আশা করা যায়! এই সরকার অসংখ্য ভুয়ো সংঘর্ষ করে যাচ্ছে।’’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল বিবেকের স্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। পরে কেজরীবাল টুইট করেন, ‘‘হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করে বিজেপি, এই কথাটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ, হিন্দুদের খুন করে, হিন্দুদের ধর্ষণ করে বিজেপি নেতা-সমর্থকেরা।’’ তবে কেজরীর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে অনেকেই। বিবেকের স্ত্রী কল্পনাও এক টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, ‘‘আমার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে নেতাদের এ ভাবে রাজনীতি করা উচিত হচ্ছে না।’’

বিবেকের শেষকৃত্যে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক, স্থানীয় বিধায়ক আশুতোষ টন্ডন-সহ যোগী সরকারের কয়েক জন নেতা। ব্রিজেশ বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। পুলিশের গাফিলতির ফল। ঘটনাটি ধামাচাপাও দিতে চেয়েছিল তারা। নিহতের পরিবারটি যাতে দ্রুত বিচার পায়, দেখব। আর স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্যসচিব ও ডিজিপি-র কাছে একটাই অনুরোধ, বড় শহরে যেন বোধসম্পন্ন পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হয়।’’ ব্রিজেশ আরও জানান, অপরাধীকে কঠোর সাজা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তও হবে। উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ওপি সিংহও শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনিও অভিযুক্তদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement