কসাইখানা তুলে লাভ কতটা মুখ্যমন্ত্রী যোগীর?

লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত ‘গোলাপি বিপ্লব’-এর বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়তেন। অভিযোগ তুলতেন, কংগ্রেসের জমানায় কসাইখানা ও মাংস রফতানির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। বাস্তব হল, মোদী জমানায় মাংস রফতানি বন্ধ তো হয়ইনি। উল্টে বেড়েছে। মূলত মহিষের মাংস। অর্থনীতির বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

সঙ্কটে: ভিড় কম টুন্ডে কাবাবিতে। ছবি: পিটিআই।

লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত ‘গোলাপি বিপ্লব’-এর বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়তেন। অভিযোগ তুলতেন, কংগ্রেসের জমানায় কসাইখানা ও মাংস রফতানির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। বাস্তব হল, মোদী জমানায় মাংস রফতানি বন্ধ তো হয়ইনি। উল্টে বেড়েছে। মূলত মহিষের মাংস। অর্থনীতির বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন মোদী।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকার কসাইখানা বন্ধ করতে উদ্যোগী হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের অর্থনীতির কথা মাথায় রাখলে এই পদক্ষেপ কতখানি বাস্তব? সরকারি হিসেবই বলছে, মহিষের মাংস বা ‘বাফ’ রফতানিতে ভারত বিশ্বে প্রথম। ২০১৫-য় ভারত প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের বাফ রফতানি করেছে। এর অর্ধেকই আসে উত্তরপ্রদেশ থেকে। মাংস, চামড়া ও অন্যান্য পণ্য ধরলে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার শিল্প। অন্তত দেড় কোটি মানুষ এর উপরে নির্ভরশীল। উত্তরপ্রদেশে বেকারির হার জাতীয় গড়ের থেকে অনেক বেশি। লক্ষ লক্ষ যুবককে রুটিরুজির জন্য ভিন্‌ রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়। শিল্পে বৃদ্ধির হার বা লগ্নির সম্ভাবনার মাপকাঠিতে উত্তরপ্রদেশ পিছনের সারির রাজ্যগুলির একটি। কসাইখানা বন্ধ করলে রুটিরুজিতে আঘাত আসবে।

আরও পড়ুন: উড়তে মানা জুতো পেটা করা সাংসদের

Advertisement

কসাইখানা বন্ধ ও কৃষিঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যোগীর সামনে এখন বড় প্রশ্ন ঋণ মকুবের টাকা আসবে কোথা থেকে। অরুণ জেটলি বলে দিয়েছেন, কেন্দ্র টাকা জোগাবে না। আর কসাইখানা বন্ধ করলে রাজ্যের রাজস্ব কমবে। উপ-মুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা লখনউয়ের মেয়র ছিলেন। তাঁর আমলে লখনউয়ে অত্যাধুনিক কসাইখানার কাজ শুরু হয়েছিল। অস্বস্তিতে তিনিও।

এ দিকে গোটা রাজ্যেই মহিষের মাংস জোগানে ধাক্কা লেগেছে। পুরনো লখনউয়ের বিখ্যাত টুন্ডে কাবাবি ও রহিমের নিহারির দোকান কাল বিক্রি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিল কিছু ক্ষণ। বড়া কাবাব বা ‘বাফ কাবাব’ ছেড়ে শুধু চিকেন-মাটনের কাবাব বেচা শুরু করেছে তারা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বরের প্রশ্ন, ‘‘যোগী কি উত্তরপ্রদেশকে গুজরাতের মতো নিরামিষাশী রাজ্যে পরিণত করতে চান!’’ এই প্রশ্নও উঠছে, গুজরাতে বিজেপি সরকার মাংস উৎপাদন বা রফতানি বন্ধ করেনি। সেখানে অনেক কসাইখানা হিন্দুর, শ্রমিকরা মুসলমান। তা ছাড়া, উত্তরপ্রদেশের মতো গরিব রাজ্যে সস্তায় প্রোটিনের জোগানের প্রশ্নও জড়িয়ে রয়েছে।

মাংস রফতানি সংগঠনের বক্তব্য, কসাইখানাকে শিল্পের তকমা দিয়েছে কেন্দ্র। উত্তরপ্রদেশ সরকার তা কী করে বন্ধ করে! মাংস রফতানি মার খেলে ব্রাজিলের মতো দেশ লাভবান হবে। তাঁদের যুক্তি, বেআইনি কসাইখানার সঙ্গে যন্ত্রচালিত কসাইখানা বন্ধ করা হলে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement