ফাইল চিত্র।
চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র বিংশতম সম্মেলেনে সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যে ভাবে সেনাবাহিনীর পরাক্রমবার্তা দিয়েছেন এবং ভৌগোলিক সম্প্রসারণের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, তাতে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এমনটাই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
সিপিসি-সম্মেলনের প্রথম দিনে তাইওয়ান, হংকং-কে দমিয়ে রেখে পশ্চিমের উদ্দেশে রণং দেহি বার্তা দিয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট। তার কূটনৈতিক প্রভাব ভারতের উপরেও পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষ করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে লাদাখ সীমান্তে গত সওয়া দু’বছর ধরে যখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি জারি রয়েছে ভারত এবং চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে। সেই আগ্রাসনকে নিজের দেশের বীরত্বের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরে গালওয়ান সংঘর্ষের ভিডিয়ো ক্লিপও দেখানো হয়েছে সিপিসি-র সম্মেলনে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের বক্তৃতায় তিনটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন জিনপিং। এক, এ বার চিন দেশের অভ্যন্তরে আরও সক্রিয় হবে সমস্ত ধর্মের ‘চিনাকরণ’ করতে। চিনের প্রেসিডেন্টের কথায়, সংখ্যালঘুর (তিব্বতি, উইঘুর সম্প্রদায়) সংস্কৃতি ও আচারকে মুছে দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক করার বার্তার মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট করেছেন, চিনা সীমান্তবর্তী ভূখণ্ডগুলিতে আগ্রাসনের (যেগুলি চিন নিজের বলে দাবি করে) প্রবণতা বাড়াবে তাঁর সরকার। তাইওয়ানে সেনা নামানোর বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়াযাচ্ছে না।
তৃতীয়ত, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নিজেদের ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিয়ে আমেরিকা এবং জাপানকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রয়োজনে আমেরিকা এবং তার মিত্র রাষ্ট্রগুলির উপর শক্তিপ্রয়োগে পিছপা হবে না বেজিং। সব মিলিয়ে এটা পরিষ্কার, জিনপিং তাঁর তৃতীয় দফায় আরও বেশি করে চিনের কর্তৃত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর চাপানোর চেষ্টা করবেন।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, জিনপিংয়ের বক্তৃতায় মোট ৭৩ বার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি উঠে এসেছে। জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখার বার্তা দেওয়া হয়েছে। গালওয়ানের ক্লিপ দেশের মূলস্রোতের সংবাদমাধ্যমে ঘুরে ফিরে আসা, গালওয়ান-কাণ্ডে আহত চিনা সেনা কিউই ফাবাও-কে সম্মেলনে গুরুত্ব দেওয়াও ভারতের জন্য যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ।