প্রার্থনা-হাজিরা বদল এনেছে বিএসএনএলে

‘ইতনে শক্তি হামে দে না....।’এই এক প্রার্থনা-সঙ্গীতই বদলে দিয়েছে শিলচর বিএসএনএল-এর কর্মসংস্কৃতি। সকাল ঠিক ১০টা ১০ মিনিটে এই গান বাজিয়ে দেওয়া হয় অফিসে। সবাই ততক্ষণে জড়ো হয়ে যান নীচতলায়। ঠিক পাঁচ মিনিটের গানের মধ্যেই অফিসের ক্যামেরা তার কাজ সেরে নেয়।

Advertisement

উত্তম সাহা

শিলচর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৭
Share:

সকালের হাজিরা-প্রার্থনা। শিলচর বিএসএনএল প্রশাসনিক ভবন চত্বরে। — নিজস্ব চিত্র

‘ইতনে শক্তি হামে দে না....।’

Advertisement

এই এক প্রার্থনা-সঙ্গীতই বদলে দিয়েছে শিলচর বিএসএনএল-এর কর্মসংস্কৃতি। সকাল ঠিক ১০টা ১০ মিনিটে এই গান বাজিয়ে দেওয়া হয় অফিসে। সবাই ততক্ষণে জড়ো হয়ে যান নীচতলায়। ঠিক পাঁচ মিনিটের গানের মধ্যেই অফিসের ক্যামেরা তার কাজ সেরে নেয়। পরে সেই ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হয় চিফ জেনারেল ম্যানেজারের কাছে।

শুরুর দিকে নানা ওজর-আপত্তি উঠলেও এখন পুরো উল্টো ব্যাপার। সাউন্ড সিস্টেমে ক্যাসেট বাজতেই অনেকে তার সঙ্গে স্বেচ্ছায় গলা মেলান। অফিস-হাজিরা নিশ্চিত করতে সবাই ক্যামেরার দিকে উঁকিঝুঁকি মারেন। শিলচর এসএসএ-র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ দাস জানান, জেনারেল ম্যানেজার থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সবাই নির্দিষ্ট জায়গায় সমবেত হন। এটিই এখন প্রধান হাজিরা-নথি। চিফ জেনারেল ম্যানেজার এম কে শেঠ তাঁর শিলচর সফর কালে এই ভাবনা প্রকাশ করলে অনেকেই মুখ লুকিয়ে হেসেছিলেন। অফিসেও যে প্রার্থনা হতে পারে, সে দিন কেউ ভাবতেই পারেননি। পরে এই ভাবনাই যখন অফিস সার্কুলার হয়ে আসে, অফিসার-কর্মীরা আপত্তি তুলেছিলেন। চিফ জেনারেল ম্যানেজার বা জেনারেল ম্যানেজারের কাছে গিয়ে বিক্ষোভ না দেখালেও সেকশন ইনচার্জদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। কর্মীরা জানতে চান, তাঁরা এখনও স্কুলের পড়ুয়া নাকি, প্রার্থনা করতে হবে! হাজিরার নানা উপায় থাকার পরও কেন নিয়মিত তাদের প্রার্থনায় মিলিত হতে হবে। কিন্তু ক্যামেরায় তোলা ফটো সোজা গুয়াহাটিতে চিফ জেনারেল ম্যানেজারের কাছে যাচ্ছে দেখে শেষ পর্যন্ত তাঁদের আর কিছু করার ছিল না। আপত্তি সত্ত্বেও দাঁড়াতে হয়েছে সবাইকে। এখন অবশ্য আপত্তির জায়গা উধাও। সবাই সকাল ১০টায় অফিসে ঢুকে অপেক্ষায় থাকেন কখন বেজে উঠবে প্রার্থনা-সঙ্গীত। প্রার্থনা সারার পর যে যার কাজে যান।

Advertisement

অভিজিৎবাবুর কথায়, বিরাট লাভ হয়েছে। হাজিরা খাতা কি বায়োমেট্রিকে উপস্থিতির ফাঁক থেকেই যাচ্ছিল। কারণ সব কিছুরই নিয়ন্ত্রণ ছিল এখানকার অফিসারদের হাতে। নানা কারণ দেখিয়ে রেহাই মিলে যেত। ফলে ১১টার আগে কাজকর্ম শুরুই হতো না। এখন দশটায় অফিসে আসা নিশ্চিত হওয়ায় কাজের সময় বেড়ে গিয়েছে। গ্রাহকরা উপকৃত হচ্ছেন। অভিজিৎবাবু জানান, শুধু জেনারেল ম্যানেজারের অফিসেই নয়, প্রার্থনা-হাজিরা চালু হয়েছে তাঁদের সব ক’টি অফিসেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement