লিঙ্গসাম্যের দাবিতে কেরলের রাস্তায় মানব-পাঁচিল গড়ে তুললেন মহিলারা। ছবি: সংগৃহীত।
শবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশাধিকার তথা লিঙ্গসাম্যের দাবিতে কেরলের ৬২০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে মানব-পাঁচিল গড়ে তুললেন মহিলারা। মঙ্গলবার এই অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন লক্ষ লক্ষ মহিলা। এই প্রতিবাদের সমর্থন দিয়েছেন বহু পুরুষও।
গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও শবরীমালার মন্দিরে ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে কেরলের নানা প্রান্তে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন ঋতুমতীরা। শিক্ষা-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কেরলের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য সত্ত্বেও মধ্যযুগীয় অন্ধকার যুগে যাতে মহিলাদের ঠেলে না দেওয়া হয়, সেই দাবিই জানালেন প্রতিবাদীরা। যদিও তাঁদের শপথে শবরীমালার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এ দিন বিকেলে ৪টে থেকে উত্তর কেরলের কাসারগোড় থেকে দক্ষিণ প্রান্তের তিরুঅনন্তপুরম পর্যন্ত ওই মানব-পাঁচিল গড়ে তুলতে শুরু করেন মহিলারা। এই বিক্ষোভে রাজ্য সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সাধারণ মহিলাদের পাশাপাশি তাতে সামিল হলেন রাজ্যের বিশিষ্টরা। সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য তথা সাংসদ বৃন্দা কারাটও এই প্রতিবাদে অংশ নেন। এ দিন বৃন্দা দাবি করেন, “আরএসএস এবং বিজেপি মিলে মহিলাদের অন্ধকার যুগে ঠেলে দিতে চাইছে।”
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
আরও পড়ুন: ‘আগে আমার সম্প্রদায়, তার পরে জনগণের কাজ করব’! বিতর্কিত মন্তব্য রাজস্থানের মন্ত্রীর
আরও পড়ুন: মোবাইলের নেশা ছাড়াতে মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা বাবার
সিপিএমের উদ্যোগে এই মানব-প্রাচীরে সমর্থন রয়েছে এসএনডিপি, কেপি এমএস-সহ রাজ্যের ১৭৬টি সংগঠনের। তবে মহিলাদের এই প্রতিবাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, সরকারি টাকার অপচয় করে এটি সংগঠিত করেছে শাসক দল। এবং তাতে রাজ্য সরকারের মহিলা কর্মীদের যোগদানে বাধ্য করা হয়েছে। তবে বিরোধীদের সে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁর দাবি, মানব-প্রাচীরে যোগদানে সরকার কাউকে জোর করেনি। মহিলা সরকারি কর্মচারীরা এতে যোগ দিতেই পারেন। পাশাপাশি, সরকারি টাকায় নয়, বরং এই প্রতিবাদের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদাও তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার।
কেরলের উত্তর থেকে দক্ষিণে এই মানব-প্রাচীরের জন্য গোটা রাজ্যে যাতে ট্র্যাফিক জ্যাম না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। এ দিন দুপুরের পর থেকে ইড়ুকি, কোঝিকো়ড়, কুন্নুর, তিরুঅনন্তপুরম-সহ বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এই প্রতিবাদে ১৮ বছর বয়সীদের অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রায় দিয়েছে কেরল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)