নৌবাহিনীতে মহিলা অফিসারদের নিয়োগ নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। —ফাইল চিত্র
সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়োগের জন্য আগেই নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ বার ভারতীয় নৌবাহিনীতেও সেই একই নিয়োগ ব্যবস্থা চালু করার কথা বলল শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার একটি ঐতিহাসিক রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, ভারতীয় নৌবাহিনীতে মহিলা অফিসাররাও পুরুষদের সমকক্ষ। লিঙ্গবৈষম্য না রেখে পুরুষ ও মহিলা অফিসারদের সঙ্গে একই রকম আচরণ করা উচিত বলেও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন বিচারপতিরা।
এ দিন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ নিয়ে রায় দিতে গিয়ে বলে, যে সব মহিলারা দেশের সেবা করছেন তাঁদের স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়োগ না করা হলে, তা চরম অবিচার হবে। এ নিয়ে তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে পদক্ষেপ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালতের মতে, নৌবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী ভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও লিঙ্গবৈষম্য থাকতে পারে না।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সে সময় বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগির ডিভিশন বেঞ্চই জানিয়ে দেয়, সেনাবাহিনীতে মহিলাদের নিয়োগ একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ। এ নিয়ে কোনওরকম বৈষম্য চলবে না। এ দিন নৌবাহিনীর ক্ষেত্রেও সেই রায়ের ব্যতিক্রম হয়নি। শীর্ষ আদালতের মতে, মহিলা অফিসারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ সরে গেলে পুরুষ ও নারীর আরও কোনও ভেদাভেদ থাকবে না।
আরও পড়ুন: ফের দেশে করোনায় মৃত্যু, দিল্লি, কর্নাটকের পর এ বার মহারাষ্ট্রে
ভারতীয় বাহিনীতে চিকিৎসা ক্ষেত্র বাদ দিয়ে অন্যান্য পদে মহিলাদের নিয়োগ শুরু হয় ১৯৯২ সালে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্থায়ী কমিশনড অফিসার পদে অর্থাৎ কুড়ি বছর কাজ করার সুযোগ তাঁরা পাননি। পদোন্নতি বা পেনশনের মতো সুবিধা বাদ দিয়ে শুধু ১৪ বছর কাজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে সশস্ত্র বাহিনীতে যুদ্ধ করার এবং কম্যান্ডিং অফিসার পদে নিযুক্ত হওয়ার অধিকার আদায় করেছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন মহিলা সদস্য। কিন্তু হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন ফুটবলার পিকে-র অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক
এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার তার অবস্থান জানাতে গিয়ে বলে, মহিলাদের স্থায়ী কমিশনড পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা তাঁদের মানসিক সীমাবদ্ধতা। এই মত বৈষম্যমূলক বলেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আদালত।