মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে মেট্রোয় চড়ে হাসপাতালে গেলেন অটোয় গণধর্ষিতা

প্রথমেই গণধর্ষণের অভিযোগ কেন আনা হল না? মানেসর পুলিশের সহকারী কমিশনার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই তরুণী ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। যদি ধর্ষণের কথা জেনে তাঁর স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান, সেই ভয়েই প্রথমে যৌন অত্যাচারের কথা প্রকাশ্যে আনতে চাননি তিনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুরুগ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৭ ০৪:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

চলন্ত অটোতে চলছিল বছর তেইশের তরুণীর শ্লীলতাহানি। প্রতিবাদ করার সময় কেঁদে উঠেছিল কোলে বসা তাঁর ছ’মাসের শিশুকন্যা। তাতে বিরক্ত হয়ে ওই শিশুটিকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয় অটোর আরোহীরা। তরুণীর অভিযোগ, মাথায় গুরুতর আঘাত লেগে রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর সন্তানের। অটো চালক ও তার দুই সওয়ারি তাঁকে গণধর্ষণ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিশুটির মা। রাত দুটো নাগাদ তাঁদের ফেলে দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ভোর পর্যন্ত মেয়েকে কোলে নিয়ে সেখানেই পড়ে ছিলেন ওই তরুণী। পর দিন ভোরে একটি অটো করে পৌছন পুরোন গুরুগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে। সেখানে চিকিত্সকের কাছে নিয়ে গেলে শিশুটি মারা গেছে বলে জানান তিনি। কিন্তু মা তা বিশ্বাস করেননি। ছুটে যান দিল্লির তুঘলকাবাদে বাপের বাড়িতে। সেখান থেকে মেয়ে কোলে মেট্রোয় চেপে হাসপাতাল। সেখানেও ডাক্তাররা জানান, কোলের শিশুটি বেঁচে নেই।

Advertisement

২৯ মে গভীর রাতে হরিয়ানার গুরুগ্রামের ঘটনা। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় অত রাতেই নিজের বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যাচ্ছিলেন ওই তরুণী। সঙ্গে ছিল শুধু শিশুটি। গুরুগ্রামের খান্দসা গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি। দিল্লি-গুরুগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ের কাছে একটি রাস্তায় অটোতে চাপেন তিনি। তাতে তখন আরও দুই যাত্রী বসেছিল। তরুণীর অভিযোগ, অটোয় ওঠামাত্র বাকি দুই আরোহী তাঁর শ্লীলতাহানি করতে থাকে। তিনি চিৎকার করে প্রতিবাদ করার সময় শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। তাতে খেপে গিয়ে শিশুটিকে রাস্তায় ফেলে দেয় অটোয় উপস্থিত তিন জন। তার পর তরুণীটিকে গণধর্ষণ করে তারা। পরের দিন মানেসরের এক থানায় মেয়েকে খুনের অভিযোগ করেন ওই তরুণী। গুরুগ্রামের ডিসিপি জানিয়েছেন, ওই তরুণীর অভিযোগ মতো অটোচালক আর বাকি দুই যাত্রীর বিরুদ্ধে প্রথমে শুধু খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু পরে মত পাল্টান ওই তরুণী। সাহস জুগিয়ে পুলিশকে জানান, তাঁকে গণধর্ষণও করা হয়েছে। গত ৩ জুন মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয় তরুণীর। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ।

আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপ প্রমাণ, জেলে ৩ ধর্ষক ছাত্র

Advertisement

প্রথমেই গণধর্ষণের অভিযোগ কেন আনা হল না? মানেসর পুলিশের সহকারী কমিশনার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই তরুণী ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। যদি ধর্ষণের কথা জেনে তাঁর স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে যান, সেই ভয়েই প্রথমে যৌন অত্যাচারের কথা প্রকাশ্যে আনতে চাননি তিনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এখনও কোনও অপরাধীই ধরা পড়েনি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাস্তার আশপাশের এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অটোচালক আর বাকি দুই সওয়ারির খোঁজ চলছে।

নির্ভয়া কাণ্ডের পরে কয়েক বছর কেটে গেলেও দেশের কোনও অংশেই যে মেয়েরা সুরক্ষিত নন, এই ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল। গত মাসেও বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে হরিয়ানায়। গুরুগ্রামে বাইশ বছরের এক তরুণীকে একটি চলন্ত গাড়িতে গণধর্ষণ করে তাঁকে রাস্তাতেই ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তার পরও নজরদারি বাড়ায়নি প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement