প্রতিরোধ, বিক্ষোভ আর বিতর্ক সঙ্গে নিয়েই এ মাসের জন্য বন্ধ হয়ে গেল শবরীমালায় আয়াপ্পার মন্দিরের দরজা। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ তার ঐতিহাসিক রায়ে সব বয়সের মহিলাদের জন্য খুলে দিয়েছিল শবরীমালা মন্দিরের দরজা। বছরের পর বছর ধরে ওই মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের প্রবেশাধিকার নেই। শীর্ষ আদালতের রায়ের পরে গত বুধবার প্রথমবার খুলেছিল মন্দিরের দরজা। তার পর থেকে মোট ন’জন ঋতুমতী মহিলা পাহাড়ের চূড়ায় মন্দিরের মূল বিগ্রহ দর্শন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশি নিরাপত্তা সত্ত্বেও কেউই দর্শন করতে পারেননি। ফলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও ঋতুমতী মহিলাদের জন্য অধরাই রয়ে গেল শবরীমালার মন্দির দর্শন। সামনের মাসে ফের খুলবে মন্দির।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঋতুমতী মহিলাদের প্রবেশ আটকাতে এখনও হাজার খানেক আয়াপ্পা ভক্ত মন্দির চত্বরে রয়েছেন। যে কোনও মুহূর্তে তাঁরা আইন নিজেদের হাতে নিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। রাজ্যের কাছে চিঠি লিখে কর্তৃপক্ষ জানান, রীতি ভাঙলে তাঁরা মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন। এই পরিস্থিতিতে আজ সংবাদমাধ্যমকে পেম্বা বেস ক্যাম্প থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। তাদের দাবি, বিক্ষোভকারীরা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হতে পারে বলে খবর রয়েছে তাদের কাছে। এর আগেও মহিলা সাংবাদিকের উপর চড়াও হন আয়াপ্পা ভক্তেরা। ভাঙচুর করা হয় তাঁদের গাড়ি। ফলে আজও সেই পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, তাই আগেভাগেই সাংবাদিকদের সরে যেতে বলে পুলিশ। তবে শেষ দিনে আর কোনও ঋতুমতী মহিলা মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেননি বলেই জানা গিয়েছে। ফলে আজ মন্দির চত্বরে তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা কিছু ঘটেনি। মন্দিরে মহিলা ভক্তদের উপরে আক্রমণ আর মন্দির চত্বরে গোলমাল বাধানোর ঘটনায় আরএসএসকে দুষেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কিন্তু বিজেপি আজ সেই অভিযোগ খারিজ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় যাতে কার্যকর না হয়, সে জন্য কেন্দ্রের কাছে পাল্টা অধ্যাদেশ জারির আর্জি জানিয়েছে কেরলের বিরোধী দলগুলি।
ঐতিহাসিক রায় দানের পর পরই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি দাখিল হয় শীর্ষ আদালতে। গত ৯ অক্টোবর এ নিয়ে জরুরিভিত্তিক শুনানির আর্জি নাকচ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছিল, দশেরার ছুটির পরে আর্জি শুনবে শীর্ষ আদালত। আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি এস কে কলের বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী কাল এ নিয়ে শুনানির তারিখ স্থির করবে আদালত। বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘আমরা জানি ১৯টি পুনর্বিবেচনার আর্জি ঝুলে রয়েছে। আগামী কাল আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’’