প্রতীকী ছবি।
২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের কাশ্মীরে অপহরণ। শনিবার পাঁচ জনকে অপহরণ এবং এক জনকে খুনের পর রবিবার ফের এক যুবককে অপহরণ করল জঙ্গিরা। শোপিয়ান সুহেল আহমেদ গনাই নামে এক যুবককে রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে তারা তুলে নিয়ে যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত ওই যুবকের সন্ধানে কোনও সূত্র মেলেনি। তবে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
শনিবার শোপিয়ানের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পাঁচ জনকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। তার মধ্যে হুজাইফ কুট্টে নামে ১৯ বছরের এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করে জঙ্গিরা। সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পাঁচ জনের মধ্যে দু’জনকে পরে ছেড়ে দিলেও বাকি দু’জন এখনও নিখোঁজ।
আরও পডু়ন: অমৃতসরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গুলি-গ্রেনেড, হত অন্তত তিন, জখম বহু
ওই ভিডিয়োতে দেখা যায় একাদশ শ্রেণির ছাত্র হুজেইফকে পিছমোড়া করে হাত বেঁধে রেখেছে জঙ্গিরা। বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করে জঙ্গিরা। কিন্তু তার উত্তর দেওয়ার আগেই ওই যুবকের গলা কেটে হত্যা করে তারা।
আরও পড়ুন: রাফাল নিয়ে ১৫ মিনিট বিতর্ক করুন! একটি প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারবেন না মোদী, বললেন রাহুল
বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশের চর সন্দেহে একের পর এক যুবক ও কিশোরকে অপহরণ করছে জঙ্গিরা। বৃহস্পতিবার ১৭ বছরের নাদিম মনজুরকে গুলি করে হত্যা করার ভিডিয়ো প্রকাশ করে জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন। তাতে দেখা যাচ্ছে, জঙ্গিরা ওই কিশোরের কাছে জানতে চাইছে যে সে এক জঙ্গির হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না। কিন্তু কিশোর প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগেই তাকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে আততায়ীরা। গত কাল শোপিয়ান ও কুলগামের কয়েকটি গ্রাম থেকে পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। তাদের মধ্যে বছর উনিশের হাফিজ আশরফ কুট্টের গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে শোপিয়ান থেকে। পরে অপহৃতদের মধ্যে তিন জনকে মুক্তি দেয় জঙ্গিরা। পঞ্চম জনের এখনও খোঁজ মেলেনি। আজ ফের সুহেল আহমেদ গনাইয়ের অপহরণ ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ওই এলাকায়।
পুলিশ ও সেনা সূত্রের মতে, দক্ষিণ কাশ্মীরের ওই এলাকার বাসিন্দাদের এক বড় অংশ জঙ্গিদের কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ। ফলে বাহিনীকে সাহায্য করছেন তাঁরা। তার জেরে বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে জঙ্গিদের। আজও শোপিয়ানের রেব্বান এলাকায় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন চন্দ্রিকা প্রসাদ নামে এক সিআরপিএফ জওয়ানও। সেনা ও পুলিশ অফিসারদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে একের পর এক অপহরণ ও খুনের ঘটনা ঘটিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভয় দেখাতে চাইছে জঙ্গিরা। সে ক্ষেত্রে বাহিনীর স্থানীয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ধাক্কা খাবে। নাদিম মনজুরের হত্যার দায় নিয়েছে হিজবুল মুজাহিদিন। কিন্তু হত্যার ভিডিয়ো প্রকাশের ক্ষেত্রে জঙ্গিরা আইএসের কায়দা মেনে কাজ করছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
অপহরণ ও হত্যার কড়া সমালোচনা করেছেন দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লা। মুফতির বক্তব্য, ‘‘এমন বর্বরোচিত ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কাশ্মীরি সমাজে কোনও স্থান নেই।’’ ওমরের মতে, ‘‘কোনও সংগ্রামেই এমন হত্যাকাণ্ড সমর্থন করা যায় না।’’
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)