একনাথ শিন্ডে (ফাইল চিত্র)।
মহারাষ্ট্রে নতুন সরকার গঠনের পর ৩৮ দিন অতিক্রান্ত। এখনও সেই রাজ্যে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা গঠন করতে পারেনি বিজেপি এবং একনাথ শিন্ডে শিবিরের শিবসেনা জোট সরকার। এ বার সেই রাজ্যের সচিবদের হাতে আধা-বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সরকার। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত সচিবরা এ বার থেকে যে কোনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করতে পারবেন।
দেশের সংবিধান মোতাবেক রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের কেবলমাত্র আধা-বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা থাকে। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকার এ বার সেই নিয়মেরই ব্যত্যয় ঘটাতে চলেছে। এই প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে জানিয়েছেন, তাঁর এবং উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীশের যৌথ সিদ্ধান্তেই কিছু ক্ষমতা সচিবদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রশাসনিক কাজকর্ম আরও মসৃণ হবে বলে দাবি করেছেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব মনুকুমার শ্রীবাস্তব ৪ অগস্ট একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুসারে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং সমস্ত বিভাগীয় সচিবদের অতিরিক্ত আধা-বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা গ্রহণ, পালন ও অনুসরণের কথা নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
বিরোধীরা অবশ্য এই নিয়ে শাসক জোটকে বিঁধতে ছাড়েননি। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলনেতা অজিত পওয়ার বলেছেন, “মহারাষ্ট্রের শিন্ডে-ফডনবীশ সরকার সমস্ত ক্ষমতা আমলাদের হাতে তুলে দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে।” কংগ্রেস, উদ্ধব-পন্থী শিবসেনাও এই নিয়ে সুর চড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে অবশ্য জানিয়েছেন, সমস্ত ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার হাতেই থাকছে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাসের সুরে জানান, এটা খুবই ভুল ধারণা যে, সমস্ত ক্ষমতা সচিবদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ভূষণ গগরানি জানিয়েছেন পৌর বা পঞ্চায়েত স্তরে কোনও বিরোধের নিষ্পত্তির জন্য সচরাচর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয় সব পক্ষ। মন্ত্রীদের অনুপস্থিতিতে আপাতত এই কাজটিই করবেন সচিবরা। যদিও এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন বিরোধীরা। সরকার গঠনের পর এত দিন কেটে গেলেও পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা কেন গঠন করা গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনার উদ্ধব শিবির।