North India Weather

এই মরসুমে কেন এত বেশি ঠান্ডা আর কুয়াশার দাপট উত্তর ভারতে? তিন কারণ জানাল মৌসম ভবন

মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম রাজস্থান, উত্তর মধ্যপ্রদেশে শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি জারি থাকবে। অন্য দিকে, পঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে অতিশৈত্যপ্রবাহে চলবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৩০
Share:

উত্তর ভারত জুড়ে কুয়াশার দাপট। ছবি: পিটিআই।

উত্তর, উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু রাজ্যে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা আর কুয়াশার দাপট চলছে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, হরিয়ানা, বিহার এবং অসম-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে। কবে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই মিলবে, এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে। এমন পরিস্থিতিতে মৌসম ভবন জানিয়েছে যে, এখনই হাড়কাঁপানো ঠান্ডা আর কুয়াশার হাত থেকে রেহাই মেলার কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং আগামী দিনে ঠান্ডা আরও বাড়বে। সঙ্গে থাকবে ঘন থেকে অতিঘন কুয়াশার দাপটও।

Advertisement

মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তরাখণ্ড, পশ্চিম রাজস্থান, উত্তর মধ্যপ্রদেশে শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি জারি থাকবে। অন্য দিকে, পঞ্জাব, হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে অতিশৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়াও কনকনানি ঠান্ডার পাশাপাশি হরিয়ানা, পঞ্জাব, পশ্চিম রাজস্থান, বিহার, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, অসম এবং ওড়িশায় কুয়াশার দাপট আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন।

শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি এবং কুয়াশার দাপট থেকে কবে রেহাই মিলবে? কেনই বা এ বার শীতের মরসুমে প্রকৃতি এত ‘অস্বাভাবিক’ আচরণ করছে? উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি চললেও উত্তরাখণ্ড, জম্মু-কাশ্মীরে কেন তুষারপাত হচ্ছে না? কেনই বা পুরু বরফে ঢাকা সেই দৃশ্য, সেই রোমাঞ্চ থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে পর্যটকদের? যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ এবং আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশ এবং আবহবিদেরা।

Advertisement

নতুন বছরের শুরু থেকেই আবহাওয়ার রূপে বদল লক্ষ করছেন আবহবিদেরা। হিমালয়ের রাজ্যগুলিতে বরফের দেখা নেই। সমতলে সে ভাবে বৃষ্টিও হচ্ছে না। অথচ শীতের দাপট কিন্তু বেড়েই চলেছে উত্তর ভারতে। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার শৈত্যপ্রবাহ চলছে। ১২-১৭ জানুয়ারির মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে ন্যূনতম তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নীচে নেমেছে। ২৫ ডিসেম্বর থেকে উত্তর-পশ্চিম ভারতের সমতলে কুয়াশার দাপট বেড়েছে। ১৪ জানুয়ারি থেকে সেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কোথাও কোথাও শূন্যে নেমে গিয়েছে দৃশ্যমানতা।

আবহাওয়ার এই প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য মূলত তিনটি কারণকেই দায়ী করছে মৌসম ভবন। কী সেই কারণ?

প্রথম কারণ হল পর্যাপ্ত পশ্চিমি ঝঞ্ঝার অভাব। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতে ৫-৭টি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার আবির্ভাব হয়। যা হাড় জমিয়ে দেওয়া ঠান্ডার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। উল্লেখ্য, এই মরসুমে পর্যাপ্ত পশ্চিমি ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়নি। এখনও পর্যন্ত দু’টি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হয়েছে। এ ছাড়াও পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে খুবই কম বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে উত্তর ভারতে ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়েছে। শুধু তাই-ই নয়, ওই অঞ্চলে তুষারপাতও পর্যাপ্ত হারে হয়নি। এই মরসুমে প্রায় ৮০ শতাংশ কম তুষারপাত হয়েছে। ফলে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা আরও বেড়েছে।

দ্বিতীয় কারণ হল এল নিনো। আবহবিদেরা বলছেন, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম হল, দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল থেকে উষ্ণ সমুদ্রের জল পশ্চিমে সরে গিয়ে কেন্দ্রীভূত হয় এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া উপকূলের কাছে। এর উল্টো প্রক্রিয়াটাই ‘এল নিনো’। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের যে-অংশের অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকার কথা, সেটি উষ্ণ হতে শুরু করে। সমুদ্রের সেই অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয় সমুদ্রপৃষ্ঠের বাতাসে। তার জেরে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। অর্থাৎ এল নিনো হলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়বে আবার এল নিনো দুর্বল হলে কমবে উষ্ণায়নও। কিন্তু এ বছর সেখানেই উল্টো পথে হেঁটেছে প্রকৃতি।

তৃতীয় কারণ হল সক্রিয় ‘জেট স্ট্রিম’। সাধারণত, মাটির ১২-১৪ কিলোমিটার উপর দিয়ে নদীর মতো বয়ে চলা বায়ু ‘জেট স্ট্রিম’, বর্ষা আর স্থানীয় উল্লম্ব বায়ুর উপরে এই সময়ে হিমালয়ের আবহাওয়া কেমন থাকবে তা অনেকটা নির্ভর করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement