অরুণ গয়াল। ছবি: সংগৃহীত।
স্বেচ্ছাবসর নেওয়া অরুণ গয়ালকে এক দিনের নোটিসে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। যে গতিতে ওই নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এখন প্রশ্ন হল কে এই অরুণ গয়াল, কেন তাঁকে কমিশন কর্তা পদে নিয়োগের জন্য এত তাড়াহুড়ো করল কেন্দ্র?
বর্তমানে ভারী শিল্প মন্ত্রকের সচিব পঞ্জাব ক্যাডারের অফিসার অরুণ গয়াল এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই তিনি স্বেচ্ছাবসর নেন। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। গয়াল ২০১৮-১৯ সালে সংস্কৃতি সচিবের পদে ছিলেন। বর্তমানে দেশ জুড়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে যে আজাদি কি অমৃত মহোৎসব অনুষ্ঠান চলছে তার রূপরেখা প্রণয়নের প্রশ্নে মূল মস্তিষ্ক ছিলেন অরুণ। সূত্রের মতে, সংস্কৃতি সচিব হিসেবে গয়ালের কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তী সময়ে তাই তাঁকে ভারী শিল্প মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। শাসক শিবিরের মতে, গত আট বছরে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দক্ষ অফিসার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন অরুণ। অনেকের মতে, তাই নির্বাচন কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে গয়ালকেই বেছে নেয় মোদী সরকার।
গত মে মাসে অবসর নিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। তার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের মধ্যে একটি পদ খালি পড়ে ছিল প্রায় ছয় মাস। উপরন্তু চলতি মাসেই নির্বাচনী সংস্কার সংক্রান্ত একের পর এক মামলা শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রীয় সূত্রের মতে, আদালতে নির্বাচনী সংস্কার প্রসঙ্গে শুনানি শুরু হওয়ায় সরকার আশঙ্কা করে যে কেন ছয় মাসের বেশি সময় ধরে নির্বাচন কমিশনারের পদ খালি রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দেরি না করে ভারী শিল্প মন্ত্রকের সচিব অরুণ গয়ালকে স্বেচ্ছাবসর নিতে বলা হয়। অবসরের এক দিনের মধ্যেই গয়ালকে তৃতীয় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করে কেন্দ্র। সাধারণত এক জন নির্বাচন কমিশনার সর্ব্বোচ্চ ছয় বছর বা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গয়াল তাই ২০২৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন বলে জানিয়েছে কমিশন। আগামী পাঁচ বছর কমিশনার হিসাবে কাজ করতে পারার দীর্ঘ সময়সীমাও তাঁর পক্ষে গিয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। ২০২৫ সালে বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার অবসর নিলে অরুণই তাঁর স্থান নেবেন। তাঁর সময়ে মূলত পশ্চিমবঙ্গ, অসম, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।