মণীশ তিওয়ারি।
কাশ্মীর নিয়ে আজ দফায় দফায় তরজায় জড়ালেন বিজেপি ও বিরোধী দলের নেতারা। চিন সরকারের কাশ্মীর নিয়ে বিবৃতির কড়া জবাব নরেন্দ্র মোদী সরকার কেন সঙ্গে সঙ্গে দেয়নি, তা নিয়ে আজ প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি। পরে আবার কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল কেন ব্রিটেনে গিয়ে সেখানকার বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছে, তার তীব্র সমালোচনা করে টুইট করে বিজেপি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত কাল চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই দু’দেশের তরফে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে বেজিং জানায়, কাশ্মীরের পরিস্থিতির উপরে তারা কড়া নজর রাখছে এবং তারা চায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হোক। ভারতের দাবি, কাশ্মীর ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। চিনও বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক ভাবে মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের ভারত সফরের ঠিক আগেই এই ধরনের বিবৃতি নিয়ে স্বভাবতই বিতর্ক শুরু হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি আজ প্রশ্ন তোলেন গোটা বিষয়ে মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে। টুইট করে তিনি স্পষ্টই বলেন, ‘‘চিন যখন কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছে, তখন মোদী সরকার কেন এটা বলছে না যে আমরাও হংকংয়ের বিক্ষোভের দিকে নজর রাখছি। তিব্বত আর শিনজিয়াংয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিও নজরে আছে। এমনকি দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিং কী কী পদক্ষেপ করছে, তা-ও আমাদের চোখ এড়ায়নি।’’ কাল অবশ্য চিনের বিবৃতির পেশের বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। যেখানে মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, ‘‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চিনের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাতের খবর আমরা পেয়েছি। দু’জনের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে কথা হয়েছে বলেও শুনেছি। জম্মু-কাশ্মীর ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। চিন আমাদের অবস্থান জানে। অন্য কোনও রাষ্ট্রের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কথা বলা উচিত নয়।’’
কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আরও জলঘোলা হয় ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের একটি টুইটকে ঘিরে। করবিন একটি ছবি পোস্ট করে জানান কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ হয়েছে। সেখানে কাশ্মীর নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা কমল ধালিওয়ালকে সেই ছবিতে দেখা যায়। এ বার মাঠে নামে বিজেপি। দলের তরফে টুইট করা হয়, ‘‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কংগ্রেস নেতারা আন্তর্জাতিক স্তরে কী আলোচনা করেছেন, দেশের মানুষকে সেটা জানাতে হবে।’’ কংগ্রেসও অবশ্য পাল্টা একটি টুইটে আজ জানিয়েছে, করবিনের দল কাশ্মীর নিয়ে যে প্রস্তাব পাশ করেছিল, ব্রিটেন সফরে গিয়ে তার সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতারা। সেই সঙ্গেই কংগ্রেস এটা স্পষ্ট করেছে যে জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অংশ। এ নিয়ে কোনও বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। এর পরই বিজেপির উদ্দেশে লেখা হয়েছে, ‘‘এই ধরনের আপত্তিকর বিবৃতি আসলে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই করা হচ্ছে।’’