Narendra Modi

Congress: চুপ কেন, মোদীকে প্রশ্নবাণ কংগ্রেসের

কংগ্রেসের অভিযোগ, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির চাপের মুখে বিজেপি আপাতত দলের ওই মুখপাত্রদের ছুটকোছাটকা বা ‘ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টস’ বলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ ০৭:৩১
Share:

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি কথাও বলেননি। চুপ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও টুঁ শব্দ করেননি।

Advertisement

বিজেপি মুখপাত্রদের পয়গম্বর-মন্তব্যের জেরে গোটা বিশ্বে লজ্জিত ভারত। তার পরেও কেন্দ্রীয় সরকারের এই তিন শীর্ষ ব্যক্তি কেন মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন, তা নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।

কংগ্রেসের অভিযোগ, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির চাপের মুখে বিজেপি আপাতত দলের ওই মুখপাত্রদের ছুটকোছাটকা বা ‘ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টস’ বলেছে। কিন্তু বাস্তব হল, মুসলিমদের সম্পর্কে এই বিদ্বেষমূলক মনোভাবই বিজেপি-র আসল চরিত্র। খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদী, অমিত শাহও এই পথে হেঁটেই দলের শীর্ষে উঠেছেন। সেই কারণে তাঁরা এত দিন দলের নেতারা বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করলেও মুখ বুজে ছিলেন। এখনও তাঁরা চুপ করেই রয়েছেন। অতীতে যাঁরা বিজেপিতে ‘ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টস’ ছিলেন, এখন তাঁরাই বিজেপির মূল স্রোতে চলে এসেছেন। বর্তমানে যাঁদের ‘ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টস’ বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে তাঁরা মূলস্রোতে চলে আসবেন।

Advertisement

পয়গম্বর সম্পর্কে বিজেপির মুখপাত্রদের মন্তব্যকে বিদেশ মন্ত্রক ছুটকোছাটকাদের মন্তব্য বলে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিকে সাফাই দিয়েছে। বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেছেন, ‘ছুটকোছাটকা’-রাই বিজেপির মূল। উদাহরণ দিয়ে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অমিত শাহ বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারী’-দের ছারপোকা বলে মন্তব্য করেছেন। যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, মহিলারা স্বাধীনতা পাওয়ার যোগ্য নন। ‘দেশ কে গদ্দারো কো, গোলি মারো শালো কো’ বলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। প্রজ্ঞা ঠাকুর নাথুরাম গডসেকে ‘প্রকৃত দেশভক্ত’এর
তকমা দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিভাজন এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের কথাও বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে মনে করিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা। তিনি জানিয়েছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী ২০১৭-তে উত্তরপ্রদেশে গিয়ে শ্মশান-কবরস্থানের তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, গ্রামে কবরস্থান তৈরি হলে শ্মশানও তৈরি হওয়া দরকার। ২০১৯-এ নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে বলেছিলেন, কারা আগুন লাগাচ্ছে, তা তাদের পোশাক দেখেই বোঝা যাচ্ছে। পবনের প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে দলের মুখপাত্রদের ছুটকোছাটকা বলতে পারেন! আপনিও তো এই রাস্তা দিয়েই হেঁটে এখানে এসে পৌঁছেছেন। আপনি কাউকে ছুটকোছাটকা বলতে পারেন না। এখন বললেও আগামিকাল এই নূপুর শর্মা, নবীন কুমার জিন্দলদেরই বিজেপি দলের মূলস্রোতে নিয়ে আসবে। গতকালের ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টসরা যেমন বুধবার বিজেপির মূলস্রোতে চলে এসেছেন, বুধবারকের ফ্রিঞ্জ এলিমেন্টসরাও আগামিকাল মূলস্রোত হয়ে যাবেন।’’

বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বুধবার দাবি করেছেন, বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দেওয়ার পরে এখন আর কোনও দেশে সমস্যা নেই। ভারতীয় পণ্য বয়কট করা বা পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে কর্মরত ভারতীয়দের কোনও সমস্যা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ব্যক্তি কোনও কটূ মন্তব্য করেননি। যাঁরা করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিয়েছে। এ নিয়ে খেরার বক্তব্য, ‘‘গোটা বিশ্ব ভারতের শাসক দলের বিদ্বেষপূর্ণ চরিত্র, হিংসাপূর্ণ বিবৃতি ও প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা দেখে অবাক। প্রধানমন্ত্রী তো আট বছর ধরেই চুপ। এমন নয় যে তাঁর কথা বলার শখ নেই। কিন্তু তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রীও চুপ।’’

কংগ্রেসের অভিযোগ, গত সাত-আট বছর ধরে বিরোধী শিবির, নাগরিক সমাজ, অবসরপ্রাপ্ত আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে বিজেপির নেতাদের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যে রাশ টানতে অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কথা শোনেননি, কিছু বলেননি। উল্টে তাঁদের ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’, ‘খান মার্কেট গ্যাং’, ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ তকমা দেওয়া হয়েছে। এখন অন্য রাষ্ট্রের ধমক খেয়ে চটজলদি পদক্ষেপ করতে হচ্ছে। নিজের দলের মুখপাত্রদের ছুটকোছাটকা ব্যক্তি বলতে হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement