স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে চিনের নাম মুখে না আনায় মোদীকে আক্রমণ সুরজেওয়ালার। —ফাইল চিত্র।
লাদাখ প্রসঙ্গে ভারতীয় জওয়ানদের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন তিনি। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে কৌশলে চিনের নাম এড়িয়ে গিয়েছেন। তা নিয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করল কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, ক্ষমতায় বসে রয়েছেন যাঁরা, তাঁরা কি চিনের নাম মুখে আনতে ভয় পাচ্ছেন?
৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে শনিবার লালকেল্লায় ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে নাম না করে চিন ও পাকিস্তানের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পর্যন্ত যখনই দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কেউ, ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের উচিত জবাব দিয়েছে।’’
লাদাখ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে চলেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হতেই দিল্লিতে দলের সদর দফতরে পতাকা উত্তোলন করে সাংবাদিক বৈঠক করেন দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা।
আরও পড়ুন: সীমান্ত-চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে জানে ভারত, মোদীর নিশানায় চিন-পাকিস্তান
সেখানে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যেক কংগ্রেস সদস্য এবং দেশের ১৩০ কোটি মানুষ সেনাবাহিনীকে নিয়ে গর্ব অনুভব করেন এবং সেনাবাহিনীর উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে তাঁদের। যখনই চিন আমাদের আক্রমণ করেছে, প্রত্যেক বার তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে সেনাবাহিনী। তাই তাদের কুর্নিশ জানাই। কিন্তু যাঁরা ক্ষমতায় বসে রয়েছেন, তাঁরা চিনের নাম মুখে আনতে ভয় পাচ্ছেন কেন? ’’
সুরজেওয়ালা আরও বলেন, ‘‘চিন যে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে এসেছে, তা নিয়ে প্রত্যেক ভারতবাসীর সরকারকে প্রশ্ন করা উচিত। জানতে চাওয়া উচিত, চিনকে ফেরত পাঠাতে এবং দেশেকে রক্ষা করতে তারা কী পদক্ষেপ করছে। এই স্বাধীনতা দিবসে সরকারের সামনে এই প্রশ্নগুলি তুলে ধরা দরকার। সরকারকে প্রশ্ন করাই আসল অর্থে গণতন্ত্র।’’
আরও পড়ুন: মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স পুনর্বিবেচনা করে দেখছে কেন্দ্র, স্বাধীনতা দিবসে জানালেন মোদী
মোদী সরকারের আমলে দেশে বাক স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন সুরজেওয়ালা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সরকার কি আদৌ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে? মানুষের মতামত নেওয়ায় বিশ্বাস করে কি আদৌ? এই মুহূর্তে দেশে বাক স্বাধীনতা, স্বাধীন চিন্তাভাবনা, ইচ্ছা মতো ঘুরে বেড়ানো, পছন্দের পোশাক পরা এবং রোজগারের অধিকার রয়েছে কি? নাকি এ সব কিছুই কেডে় নেওয়া হয়েছে?’’
প্রধানমন্ত্রী যে আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন, জওহরলাল নেহরু, সর্দার পটেল এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীরাই তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন সুরজেওয়ালা। সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির বেসরকারিকরণ করে মোদী সরকার সেই আত্মনির্ভর ভারত এবং দেশের স্বাধীনতার উপরই আঘাত হেনেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।