ছবি: সংগৃহীত।
নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে নিজের নিজের রাজ্যে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে পিনারাই বিজয়ন। উত্তরপ্রদেশে আমজনতা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পথে নেমেছেন। বারবার ছুটে যাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা খাপছাড়া ভাবেই ঘরে বসে সমাজবাদী ও বহুজন সমাজ পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনে শপথ-মঞ্চেও দেখা যায়নি তাঁদের। কেন এই নীরবতা? রাজধানীতে জল্পনা, সিবিআইয়ের জুজুই সম্ভবত ঘরবন্দি করে রেখেছে ওঁদের!
এসপি ও বিএসপি দুই দলই দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় ছিল উত্তরপ্রদেশে। রাজ্যে শক্তিশালী সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক রয়েছে তাদের। তা সত্ত্বেও গত এক মাস ধরে সিএএ-র বিরুদ্ধে মৌখিক সমালোচনা করা ছাড়া সে ভাবে পথে নামতে দেখা যায়নি অখিলেশ বা মায়াবতী কাউকেই। গত কাল সিএএ-র প্রতিবাদ জানিয়ে সাইকেল র্যালির আয়োজন করেছিল এসপি। অখিলেশ পতাকা নাড়িয়ে ওই মিছিলের সূচনা করলেও নিজে অংশ নেননি। বাবা মুলায়ম অসুস্থ। কাকা শিবপাল এখনও মেনে নিতে পারেননি অখিলেশের নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ এসপি শিবির। দলেরই এক নেতার স্বীকারোক্তি, ‘‘রাজ্যে প্রধান বিরোধী আমরা। কিন্তু কোথাও তার প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।’’ আর মায়াবতী তো শুরু থেকেই বিরোধিতা করে যাচ্ছেন কেবল টুইটারের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: রান্নার গ্যাসে লাফ, ‘মোদীর উপহার’!
কেন মাঠে মানছেন না দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী? তাঁদের গা-ছাড়া মনোভাবের পিছনে সিবিআইয়ের ভূমিকা উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকেই। সম্প্রতি যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য জমি কেনায় অনিয়মের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। তাতে নাম রয়েছে মায়াবতী ও অখিলেশের। তাই চুপচাপ রয়েছেন ওঁরা। বিরোধী শিবির মনে করছে, রাজ্যের প্রধান দুই বিরোধী শক্তি মাঠে নামলে আরও নাস্তানাবুদ হতে হবে যোগী প্রশাসনকে। তাই মায়া-অখিলেশকে ঘরে বসিয়ে রাখতেই সিবিআইকে কাজে লাগিয়েছে শাসক শিবির।
এই দুর্বলতার সুযোগটিই নিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা। অখিলেশ-মায়ার অনুপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কার্যত উত্তরপ্রদেশ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। নেত্রীর এই অতি-সক্রিয়তায় দীর্ঘ দিন বাদে অক্সিজেন পেয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। এসপি নেতাদের আক্ষেপ, ‘‘যেখানে আমাদের রাস্তায় নামার কথা ছিল, সেখানে প্রচারের আলো শুষে নিচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা।’’ খোঁচা দিচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা নিজেও। প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘অন্য বিপক্ষ দলগুলি কী করছে? তারা কি ভয় পাচ্ছে?’’ নীতিগত ভাবে তিনিও রাহুলের মতোই নির্বাচনে একলা লড়ার পক্ষপাতী। রাজ্যে দলীয় নেতৃত্বকে তার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েও এসেছেন। প্রিয়ঙ্কা বুঝতে পারছেন, এসপি-বিএসপি যত নীরব থাকবে তত সুবিধে দলের। তিনি নিজে যত পথে নামবেন, তত চাঙ্গা হবেন কংগ্রেস কর্মীরা। কংগ্রেসের সূত্রের খবর, আগামী দিনে আরও বেশি করে উত্তরপ্রদেশ সফর করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রিয়ঙ্কার।