দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া এবং মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল।
মোদীর বিরুদ্ধে কে? এই প্রশ্ন শুধু শাসক দল বিজেপির নয়, বিরোধীদের অন্দরেও এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যে, তাঁদের তরফে নেতৃত্ব দেবেন কে? এ বার এই প্রশ্নের জবাব দিলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। তাঁর মতে আগামী নির্বাচনে মোদীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন আপ নেতা তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর বাড়িতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ধরে সিবিআই তল্লাশি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে এসে শনিবার এমনই জানিয়েছেন এই আপ নেতা।
সিসৌদিয়ার কথায়, “সবাই জিজ্ঞাসা করছে, কে হবে মোদীর বিরোধী মুখ? আমরা এর উত্তর দিয়ে দিচ্ছি। আর এই উত্তরটা হল, পরের নির্বাচনের মোদী বনাম কেজরীবাল লড়াই হবে।” কেজরীবালের ডেপুটির দাবি, কেজরীবাল এবং তাঁর দলের সদস্যদের নিশানা করা হচ্ছে, কারণ তাঁরা উন্নয়নের পক্ষে আছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশির পর তিনি যে কোনও দিন গ্রেফতার হতে পারেন, বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিসৌদিয়া। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন না বলেও দাবি করেছেন তিনি।
দিল্লির বিতর্কিত আবগারি নীতি নিয়ে তদন্তে শুক্রবারই সিসৌদিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তল্লাশিতে টাকা, গহনার হদিস না পাওয়া গেলেও আবগারি নীতি সংক্রান্ত কিছু নথি পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, নিজের ঘনিষ্ঠদের মদ বিক্রির লাইসেন্স পাইয়ে দিয়েছেন সিসৌদিয়া। অন্য দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন সিসৌদিয়া।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই দিল্লির ‘শিক্ষা মডেল’-এর প্রশংসামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকার প্রখ্যাত সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ। দিল্লির শিক্ষা দফতরের দায়িত্ব রয়েছে সিসৌদিয়ার হাতেই। এই বিষয়ে কালই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে কেজরীবাল বলেছিলেন, “আমেরিকার সংবাদপত্রে যে দিন আমাদের শিক্ষা মডেলের প্রশংসা করা হল, সেই দিনই সিসৌদিয়ার বাড়িতে সিবিআই-হানা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।” শনিবার সিসৌদিয়া এই প্রসঙ্গে জানান, ওই সংবাদপত্রেই যে দিন দেশে কোভিডে মৃতদের দেহ গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল, সে দিন তিনি লজ্জিত হয়েছিলেন, কিন্তু সেই একই সংবাদপত্রে তাঁর রাজ্যের ‘শিক্ষা মডেল’-এর প্রশংসায় তিনি গর্বিত।
তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে যে ভাবে কেজরীবালকে প্রধান মুখ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন এই আপ নেতা, তাতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হলেও সম্প্রতি বিরোধী বৈঠকগুলিতে প্রতিনিধি পাঠিয়েছে আপ। রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সমর্থন জানিয়েছে বিরোধীদের তরফে মনোনীত প্রার্থীকে। কিন্তু দিল্লি, পঞ্জাব জয় করার পর, আপ যে আরও আত্মবিশ্বাসী এবং উচ্চাশী, তা সিসৌদিয়ার এই কথা থেকেই স্পষ্ট।