চিন্তায় কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
চার মাসের মধ্যে গুজরাত, হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছরের গোড়ায় ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়ে ভোট। এই রাজ্যগুলির মধ্যে কোনওটিতেই কংগ্রেসের খুব একটা ভাল ফল করার আশা নেই। এই মূহূর্তে কংগ্রেস সভাপতি পদের দায়িত্ব নিলে প্রথমেই রাহুল গান্ধীর উপরে দলের খারাপ ফলের দায় এসে পড়বে। ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে নিয়মিত ভাবে সরব নরেন্দ্র মোদীও নতুন হাতিয়ার পেয়ে যাবেন। ফের কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে রাহুল গান্ধীকে এ কথা ভাবাচ্ছে বলেই মনে করছেন দলের নেতারা।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, রাহুল শেষ পর্যন্ত রাজি না হলে অশোক গহলৌত, মুকুল ওয়াসনিক, মীরা কুমার, কুমারী শৈলজার মতো গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন কারও নাম ভাবা হতে পারে। কিন্তু তাতে গোটা দল ফের হতাশ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সনিয়া গান্ধীকেই সভানেত্রীর পদে রেখে দিয়ে অন্য কাউকে কার্যকরী সভাপতি করা হতে পারে। কিন্তু সনিয়ার শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তাঁকে সভানেত্রীর পদে রেখে দিলে নেতৃত্বের দুর্বলতাই ফুটে উঠবে।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, রবিবার থেকেই কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২১ অগস্ট থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দলের সভাপতি নির্বাচন সেরে ফেলা হবে। কিন্তু তার ৪৮ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এর প্রধান ও একমাত্র কারণ, রাহুল গান্ধী এখনও নিজের মতামত স্পষ্ট করেননি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানো রাহুল ফের সভাপতি হতে তৈরি কি না, তা এখনও কারও কাছে স্পষ্ট নয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সেই কারণেই এখনও সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না।
এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী বরাবরই বলে এসেছেন, দল তাঁকে যে দায়িত্ব দেবে, তিনি তা করতে রাজি। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে রাস্তায় নামার পরে তিনি আগামী মাস থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাহুল সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়ে রাস্তায় নামলে সবথেকে ভাল হতো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।’’ কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, আগামী বছর মে মাসে কর্নাটক এবং তার পরে বছরের শেষে ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলঙ্গানা ও মিজোরামে ভোট। এই রাজ্যগুলির মধ্যে কর্নাটক, ছত্তীসগঢ় ছাড়া অন্য কোথাও খুব বেশি ভাল ফলের আশা করছে না কংগ্রেস। ফলে সেখানেও বিজেপি রাহুলের উপরে ‘ব্যর্থ’ বলে তকমা লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।