CBI

CBI: রাজ্যে তদন্তের ঢেউ, দেশে কতটা সফল সিবিআই! ৬ মাস আগেই কোর্টকে জানায় সংস্থা

সব চেয়ে বেশি তদন্ত পড়ে রয়েছে মহারাষ্ট্রে। তার পরেই পশ্চিমবঙ্গ। তবে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত চলতে থাকা মামলার সংখ্যায় সবার উপরে বাংলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২ ১৬:২৪
Share:

তদন্তে অগ্রগতির বিচারে সত্যিই কি সফল সিবিআই। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক তদন্তের দায়িত্ব পাচ্ছে সিবিআই। সাড়ে সাত মাসে ন’টি তদন্ত— গত ফেব্রুয়ারিতে তিনটি, মার্চে একটি এবং এপ্রিল মাসে গত কয়েক দিনের মধ্যেই তিনটি মামলার তদন্তভার তাদের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এখনও বেশ কয়েকটি সিবিআই তদন্তের আবেদন আদালতে জমা পড়ে রয়েছে।

Advertisement

কিন্তু কতটা সফল সিবিআই? এ রাজ্যের সাম্প্রতিক কালের হিসাবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদক চুরি থেকে ছোট আঙারিয়া-কাণ্ড— অনেক তদন্তেরই শেষ দেখা যায়নি। সারদা, নারদ তদন্তের বয়সও হয়ে গেল অনেকটাই। এই সব দেখে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, গোটা দেশের নিরিখেই বা সিবিআই কতটা সফল?

এই সংক্রান্ত একটি হলফনামা গত অক্টোবরেই সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছিল সিবিআই। হলফনামা জমা দিয়েছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর সুবোধকুমার জায়সবাল। কোন রাজ্যে কত মামলা সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে তার তথ্যও হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন মামলার সংখ্যায় সবার উপরে মহারাষ্ট্র। মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৭৩টি। আর দু’নম্বরেই পশ্চিমবঙ্গ। জমে থাকা মামলা ৯০৫টি। এর পরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৬৯৬), বিহার (৬২৯), গুজরাত (৪৬৫), ঝাড়খণ্ড (৪৪৬)। অন্য একটি ক্ষেত্রে সবার উপরে পশ্চিমবঙ্গ। ২০ বছরের বেশি সময় ধরে সিবিআই তদন্ত চলছে রাজ্যের ১১২টি মামলায়। এই তালিকায় অন্য রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে দিল্লি (৮১), মহারাষ্ট্র (৬২) এবং বিহার (৫২)।

Advertisement

সুবোধকুমার দাবি করেছিলেন, গত দশ বছরের হিসেবে সংস্থার সাফল্য ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ। একই সঙ্গে জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের অগস্ট মাসের মধ্যে গড় সাফল্য পৌঁছবে ৭৫ শতাংশে। জায়সবালের দেওয়া সময়সীমার বাকি আর মাস চারেক। কিন্তু সত্যিই সিবিআই ওই লক্ষ্যে পৌঁছনোর দিকে কি না তা এখনও অজানা। তবে এটা ঠিক যে, সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দাখিলের পরে এখনও পর্যন্ত মামলার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সিবিআই ওই হলফনামা এমনি এমনি দাখিল করেনি। তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্টই। একটি তদন্তের ক্ষেত্রে সিবিআই ৫৪২ দিন দেরি করায় তা নিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। তার প্রেক্ষিতেই ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হলফনামা চায় সর্বোচ্চ আদালত। সেই সময় বিচারপতি সঞ্জয়কিষণ কৌল এবং বিচারপতি এমএম সুন্দরেশকে নিয়ে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চের বক্তব্য ছিল, শুধুমাত্র মামলা দায়ের করে তদন্ত করাই সিবিআইয়ের কাজ নয়। তার বিচার যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তা নিশ্চিত করাও তদন্ত সংস্থার দায়িত্ব। এই প্রসঙ্গেই বিভিন্ন নিম্ন আদালত এবং হাই কোর্টে তদন্ত সংস্থাটি কতগুলি মামলায় দোষীদের অভিযুক্ত প্রমাণ করতে সফল হয়েছে, তা সিবিআইয়ের ডিরেক্টরকে জানানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

সিবিআই হলফনামায় যে দাবি করেছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। যে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ মামলায় সাফল্যের দাবি করা হয়েছে, সেগুলিতে দোষীরা সাজাও পেয়েছেন কি না তা অবশ্য পরিষ্কার করা হয়নি। কতগুলি মামলার চূড়ান্ত পর্বের শুনানি চলছে তার তথ্যও ছিল না। তবে সিবিআই জানিয়েছিল, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংস্থার হাতে ছিল ৯,৭৫৭টি মামলা। এর এক তৃতীয়াংশ (৩,২৪৯) মামলা চলছে দশ বছরের বেশি সময় ধরে। শ’পাঁচেক মামলার নিষ্পত্তি হয়নি ২০ বছরেও। একই সঙ্গে জানানো হয়, ৩৬৭ (৩.৭ শতাংশ) মামলায় স্থগিতাদেশ রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বা বিভিন্ন হাই কোর্টের নির্দেশে। একটি মামলায় সেই ২০০০ সালের অগস্ট থেকে স্থগিতাদেশ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement