গোধরা-তিক্ততা ভুলে কীসের টানে দাভোসে

দাভোসে আজ যে দীর্ঘ বক্তৃতাটি তিনি দিয়েছেন, সেটিকেই ভারতের দাভোস-বিবৃতি হিসেবে তুলে ধরছে সাউথ ব্লক। আন্তর্জাতিক বড় আর্থিক সংস্থাগুলির সামনে ভারতীয় বাণিজ্যিক পরিবেশের রূপরেখা হিসেবেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৪
Share:

দীর্ঘ দু’দশক পরে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দাভোসের মঞ্চে। অথচ ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রতি বারই বিশ্বের অন্যতম বড় এই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মঞ্চে যাওয়ার ডাক এসেছিল তাঁর কাছে। কিন্তু দাভোস-প্রশ্নে স্বরচিত এক দেওয়াল যেন তৈরি করে রেখেছিলেন তিনি। তা ভেঙে এ বারই প্রথম দাভোসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হলেন মোদী।

Advertisement

২০০২ সালে তিনি তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। সব ঠিকঠাক, দাভোসে যাবেন ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে। কেন্দ্রে তখন বাজপেয়ী সরকার। কিন্তু তার পরেই গোধরার ঘটনা বদলে দিল পরিস্থিতি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সরব হয়ে উঠেছিল পশ্চিমের দেশগুলি। মোদীকে ভিসা দেওয়ার প্রশ্নে নিষেধাজ্ঞাও জারি করে ওয়াশিংটন। এর পরে আর আমন্ত্রণ পেলেও দাভোসের ডাকে সাড়া দেননি মোদী। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এ ব্যাপারে একটি অদৃশ্য জেদ এত দিন কাজ করে এসেছে তাঁর। যা ভাঙল, এত দিনে, দাভোসের শীর্ষ নেতৃত্বের বারংবার আমন্ত্রণে। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই রাজি হওয়ার পিছনে চিনও একটি কারণ। গত বছরেই প্রথম চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং দাভোসের ওই মঞ্চে যোগ দেন। যথেষ্ট গুরুত্বও আদায় করে নেন। কিন্তু এশিয়ায় প্রভাব বাড়ানোর যুদ্ধে এই মঞ্চকে একা চিনের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি নন মোদী। তাই আর দেরি না করে পরের বছরই তিনি তিক্ততা সরিয়ে দাভোসে। বিশ্ববাজারে লগ্নি ধরতে উদ্যোগী হয়েছেন বড় মাপের সংস্কারের তালিকা দেখিয়ে। দাভোসে আজ যে দীর্ঘ বক্তৃতাটি তিনি দিয়েছেন, সেটিকেই ভারতের দাভোস-বিবৃতি হিসেবে তুলে ধরছে সাউথ ব্লক। আন্তর্জাতিক বড় আর্থিক সংস্থাগুলির সামনে ভারতীয় বাণিজ্যিক পরিবেশের রূপরেখা হিসেবেও।

দাভোসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীই ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছেন এত দিন। সেই রেওয়াজ অনুযায়ী এ বারেও যাওয়ার কথা ছিল অরুণ জেটলির। কিন্তু মোদী নিজে যাবেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে জেটলিকে যেতে বারণ করা হয়। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, তাঁকে বলা হয়, সামনেই বাজেট অধিবেশন। তিনি যেন সে দিকেই মনোনিবেশ করেন। এই যুক্তিও দেওয়া হয় যে, সরকারের এক এবং দুই নম্বর— দু’জনের একসঙ্গে দাভোসে যাওয়া অনর্থক। রাজনীতির লোকজন অবশ্য মনে করছেন, বাজেটের বিষয়টি এ ক্ষেত্রে গৌণ। মোদী কখনওই চান না, কোনও বড় সম্মেলনে তাঁর উপস্থিতি লঘু হয়ে যাক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement