মহারাষ্ট্রের তৎকালীন রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রধান বিচারপতি। ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের সরকার পড়ে যাওয়া নিয়ে তদানীন্তন রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ৩ বছরের মহা বিকাশ আঘাডীর জোট সরকার হঠাৎ কী করে ভেঙে গেল, তা জানতেও কৌতূহল প্রকাশ করেন তিনি।
একনাথ শিন্ডে পুরনো শিবসেনা ছেড়ে দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। শিন্ডে শিবিরে যোগ দেওয়া ৩৪ জন সেনা বিধায়কের দলীয় অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার তৎকালীন স্পিকার। কিন্তু শিন্ডে শিবির জানিয়েছিল, ডেপুটি স্পিকারকেই সরানোর জন্য প্রস্তাব পেশ করেছেন তাঁরা। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল উদ্ধব শিবির। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ বিষয়ে টানা শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। এনসিপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন সাবেক শিবসেনা মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছিল। ৩ বছর পর সেই জোট ভাঙল কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চন্দ্রচূড়। বিষয়টি রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয় বলে মন্তব্য এড়িয়ে যান সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
নিজের পর্যবেক্ষণে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। চন্দ্রচূড় বলেন, “ধরা যাক কোনও বিষয়ে একটা দলের মধ্যে মতপার্থক্য হল। তা হলে কি সেই দলকে আস্থাভোট নেওয়ার কথা বলবেন রাজ্যপাল?” এই প্রসঙ্গেই তিনি জানান, রাজ্যপালকে স্মরণে রাখতে হবে যে, তিনি যথার্থ বিবেচনা না করে আস্থাভোট আহ্বান করলে নির্বাচিত সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেতে পারে। ৩ বছর সরকারে থেকেও হঠাৎ এক দিন কী করে দলের প্রতি মোহভঙ্গ হতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এই পর্যবেক্ষণের আড়ালে শিন্ডেপন্থী বিধায়কদের উদ্ধবের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থাজ্ঞাপনের দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন চন্দ্রচূড়।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংগঠনিক বেঞ্চ মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে একাধিক মামলায় উদ্ধব এবং শিন্ডে— দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেছে। ২০২২ সালের ৩০ জুন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবকে আস্থাভোট নেওয়ার কথা বলেন। আস্থাভোট স্থগিত করার আর্জি জানিয়ে উদ্ধব শিবির সুপ্রিম কোর্টে গেলেও আদালত ২৯ জুন তাদের আর্জি খারিজ করে দেয়। মহারাষ্ট্রের কুর্সি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন বালাসাহেব-পুত্র।