হাসপাতালের বিছানায় অবিনাশ। ছবি: সংগৃহীত।
সরকারি কলেজের হস্টেলে র্যাগিংয়ের শিকার হতে হল এক দল ছাত্রকে। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা। কয়েক জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কেরলের কোট্টায়াম শহরের পলিটেকনিক কলেজের এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
র্যাগিং-এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়া ২২ বছরের ওএস অবিনাশ এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, দলিত সমাজ থেকে আসা ওই ছাত্রের কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে না। অবিনাশের মতোই অন্য এক ছাত্রও গুরুতর অসুস্থ। তাঁকে কোচির একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার অভিযুক্ত ন’জনের মধ্যে পাঁচ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে কোট্টায়াম পুলিশ।
আরও পড়ুন
নিজের সাত বছরের মেয়েকে অকথ্য অত্যাচার, ধৃত মা-বাবা
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এ দিন মুখ খুলেছেন অবিনাশ। তাঁর কথায়, “গত ২ ডিসেম্বর আমাদের ন’জন ছাত্রকে নগ্ন করে একটানা বিভিন্ন কসরত করতে বলা হয়। কয়েক জনকে সমারসল্ট করতেও বাধ্য করে সিনিয়রেরা। মেঝেতে সাঁতার কাটার ভঙ্গিতেও কসরত করতে বলা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা এ ভাবেই চলতে থাকে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিল। তা সত্ত্বেও ওঁরা আমাদের ছাড়ছিল না। কিছু ছাত্রকে আবার একটা আলমারির মধ্যে বন্ধ করে গান গাইতে বলা হয়। সে দিন রাত থেকে শুরু হয়ে ভোর পর্যন্ত ঘণ্টা পাঁচেক এ ভাবেই চলেছে।”
ঘটনার পরই ত্রিসূরে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন অবিনাশ। প্রথম দিকে মা-বাবাকে কোনও কথা না জানালেও র্যাগিংয়ের জেরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে ত্রিসূরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর বন্ধুদের কাছ থেকে সব কথা জানতে পারেন অবিনাশের বাবা। পরের দিনই কোট্টায়াম থানায় গিয়ে ওই ন’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে র্যাগিং ছাড়াও খুনের চেষ্টার অভিযোগও করা হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল শিজি বলেন, “অতিরিক্ত মায়োগ্লোবিন নিঃসৃত হওয়ার জন্য অবিনাশের কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে না।”
সামান্য রোজগেরে অবিনাশের বাবা জানিয়েছেন, বেশি দিন ছেলের চিকিৎসার খরচ বইতে তিনি অক্ষম। তাঁর দাবি, “এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে তার জন্য অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”