সেই জলের ট্যাঙ্ক।- নিজস্ব চিত্র।
শহরে জল সরবরাহ বন্ধের চক্রান্তে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছিল থার্মোকল। পাম্পের মোটরে তা টুকরো টুকরো হয়ে ঢুকে যায় জলের পাইপ লাইনে। তাতেই করিমগঞ্জের অধিকাংশ এলাকায় জলের হাহাকার শুরু হয়েছে। এ সবের জন্য অভিযোগের আঙুল উঠল জলস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের একাংশ কর্মীর বিরুদ্ধে। বর্ধিত হারে বেতনের দাবিতে ৫ অগস্ট থেকে যাঁরা আন্দোলন শুরু করেছেন। ওই ঘটনার পিছনে কে বা কারা জড়িত তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু না জানালেও জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে, ষড়যন্ত্রকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। সংশ্লিষ্ট দফতর জানিয়েছে, ওই সব পাইপ থেকে থার্মোকল বের করার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু আতঙ্ক তাতে কমছে না জেলার বাসিন্দাদের। অনেকেই বলছেন, এ বার কোনও দিন ট্যাঙ্কের জলে বিষও মিশিয়ে দেওয়া হতে পারে! প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বর্ধিত হারে বেতন-সহ চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন জনস্বাস্থ্য কারিগরী বিভাগের শ’তিনেক অস্থায়ী কর্মী। ৫ অগস্ট থেকে তা শুরু হয়। তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, আন্দোলন আরও জোরদার করতে ওই অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ অন্তর্ঘাতের ছক কষেন। সে জন্য বেছে নেওয়া হয় জেলাশাসকের বাসভবনের পিছন দিকের পানীয় জলের ট্যাঙ্কটিকে। পুলিশের সন্দেহ, রাতের অন্ধকারে সেটিতে বড় বড় থার্মোকল ফেলে দেওয়া হয়। পাম্প চালানোর পর মোটরের আঘাতে তা টুকরো টুকরো হয়ে ঢুকে যায় জলের পাইপগুলিতে। তাতেই বন্ধ হয়ে যায় জল সরবরাহ। শহরের তিনটি পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পরীক্ষার সময় চোখ কপালে ওঠে বিভাগীয় আধিকারিকদের। জেলাশাসকের বাসভবনের পিছনের ট্যাঙ্ক থেকে প্রচুর থার্মোকলের টুকরো উদ্ধার করা হয়। শহরে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ নিয়ে করিমগঞ্জ থানায় মামলা রুজু করা হয়। জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এ বি দাস জানিয়েছেন, শহরের পাইপ থেকে থার্মোকল বের করার কাজ আজ শুরু করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্তও চলছে।
শহরবাসীর আশঙ্কা অন্য। অনেকেই বলছেন— বেতন বাড়ানোর দাবিতে কেউ জলের ট্যাঙ্কে থার্মোকল ফেলে দিতে পারলে আরও বেশি টাকার জন্য যে কেউ তো জলে বিষও মিশিয়ে দিতে পারে।
তদন্তকারী অফিসার মিন্টু শীল জানিয়েছেন, জলের ট্যাঙ্কে থার্মোকল ফেলার ঘটনায় তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু সকলেই পলাতক।